সোমনাথ মুখার্জি, লাউদোহা :- পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভার দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের তিলাবনি গ্রামের অদূরে প্রায় এক একর জায়গা জুড়ে রয়েছে আমবাগান। এই আমবাগানে প্রায় ১০০ প্রজাতির আম গাছ রয়েছে বলে জানান আম চাষিরা। প্রধানত লাউদোহা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে রয়েছে এই আমবাগান । স্থানীয় তিলাবনি গ্রামের বরুন নায়ক, সৈয়দ স্বপন আলী, সৈয়দ আমাল আলী, শেখ সাদেক, সৈয়দ ইমরান নামে যুবক পঞ্চায়েতের থেকে বাগানে আম চাষ করার জন্য লিজে নিয়েছেন। মোটা টাকা ডাকে নিজে নিয়েছেন আম বাগান, বছরান্তে পঞ্চায়েতকে দিতে হবে সেই টাকা।
বাগানের এক চাষী বরুণ নায়ক জানান, চাষের জন্য মাঘ মাস থেকে আষাঢ় মাস পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয়। থাকে বাগানের পরিচর্যা মুকুল এলে মুকুলের পরিচর্যা, এ আমের মুকুল আশা থেকে আম পাকা পর্যন্ত চারবার প্রত্যেকটি গাছে করা হয় কীটনাশক স্প্রে। যাতে করে আমের ফলন ভালো হয়, পোকামাকড় থেকে রক্ষা পায় ফল। এই বাগানে প্রায় ৫০০ মত রয়েছে আমগাছ। বরুণ বাবু জানান এবারে মুকুল ভালোই এসেছিল, মনে আশা জেগেছিল এবারের লক্ষ্মীর মুখ দেখা যাবে। কারণ ভালো মুকুল এলে ভালো ফলনের আশা করে চাষিরা।
তবে এবারের প্রচন্ড গরম ও অনাবৃষ্টির কারণে হয়েছে জল সংকট । তাতেই বাধ সেধেছে আমের ফলনের ওপর। ফলন হলেও সেভাবে বড় হয়নি আম। তার ওপর আম চাষিদের কাছে একটা আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে আবহাওয়া দপ্তরের ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস কে নিয়ে। চাষিরা জানান, এমনিতেই ভালো ফলন হয়নি তার ওপর প্রচন্ড বানরের উপদ্রব বাগানে। গাছপালা কমেছে, কমেছে জংলি ফল ও ফুলের। বানরের দল আম বাগানের ওপরই নজর এড়িয়ে বসে রয়েছে ।
এই বাগানে বানরের দল নষ্ট করছে গাছের ফল। আর তার ওপর যদি ঘূর্ণিঝড় হয় তাহলে বাগানে কর্মরত প্রায় ১২ জন শ্রমিকের শ্রমিক দেওয়ায় দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়াবে বাগান লিজে নেওয়া চাষীদের। আম চাষিরা বলেন, এখন ভগবানই ভরসা। জ্যৈষ্ঠ্য মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বিক্রি শুরু হয়ে যায় পাকা আমের । তবে বরুন বাবু জানান এবারে ফলন কম হওয়ায় দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। পাকা আম আশি থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হতে পারে এবছর বলে মনে করেন তিনি ।
তবে আম বাগানে চাষিরা জানান তারা তাদের বাগানের আম বাজারে বিক্রি করতে যান না বিভিন্ন এলাকা থেকে, মানুষ ও বহু ব্যবসায়ী তাদের বাগানে এসে আম কিনে নিয়ে যান । এক কথায় বাগান থেকেই বিক্রি হয় তাদের বাগানে উৎপাদিত সমস্ত ফসল।