Type Here to Get Search Results !

শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে ছাত্র ছাত্রীদের শিক্ষাদান করে চলেছেন পানাগড় রেল কলোনী হাই স্কুলের ইংরাজি বিষয়ের শিক্ষক সঞ্জয়বাবু




তনুশ্রী চৌধুরী, কাঁকসা:- শিক্ষকতা শুরু করেছিলেন ২০০৫সালে।সেই থেকে আজও নিয়ম করে নিত্যদিন বিদ্যালয়ে আসা। অনুপস্থিত হওয়ার শব্দটা তার ডাইরিতে নেই।রোজ সকালে হয় তার বোন কিংবা কোনো না কোনো ছাত্র ছাত্রী তার হাত ধরে নিয়ে আসেন বিদ্যালয়ে।তবে এই কাজ টা করতে কোনো ছাত্র ছাত্রীর বিরক্তি নেই। যতই হোক তিনি বিদ্যালয়ের একজন গুরুত্ব পূর্ণ শিক্ষক।তিনি সঞ্জয় কুমার গোস্বামী।






জন্ম থেকেই দুটো চোখেই দেখতে পান না পানাগড় রেল কলোনী হাই স্কুলের ইংরাজি বিষয়ের শিক্ষক। আর পাঁচটা বিদ্যালয়ের থেকে অনেকটা আলাদা এই বিদ্যালয়।কারণ এই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন তিনি। যাকে ছাত্র ছাত্রী থেকে শুরু করে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও অত্যন্ত শ্রদ্ধা করেন এবং ভালোবাসেন।আর থাকবেই না কেনো। সঞ্জয়বাবু বিদ্যালয়ে শুধু ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা দান করেন না।তার পাশাপাশি ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে আবৃত্তি পাঠ,নাচ গান শিখিয়ে তাদের অনুষ্ঠানে তাদের যোগদান করানোর দায়িত্বটাও সামলান তিনি।





সঞ্জয় বাবু জানিয়েছেন তিনি জন্ম থেকে চোখে দেখতে পান না।কলকাতায় যখন ব্লাইন্ড স্কুলে তাকে ভর্তি করানো হয় তখন নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয় তাকে।তবে মনের মধ্যে জেদ ছিলো তার। প্রথমে মাধ্যমিক,তার পর উচ্চ মাধ্যমিক,এই ভাবে ধীরে ধীরে কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করে এস এস সি পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে উপনীত হয়ে পানাগড় রেল কলোনী উচ্চ বিদ্যালয়ে ইংরাজি বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।সেই দিন থেকে আজও একই ভাবে বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে চলেছেন তিনি।শিক্ষাদানের পাশাপাশি কম্পিউটার চালাতেও সক্ষম। নিজেই ইংরেজিতে নোট তৈরি করে তা ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে বিতরণ করেন।








সহ কর্মী হিসেবে তাকে পেয়ে গর্বিত তার সহকর্মীরাও।বিদ্যালয়ের শিক্ষক অরূপ কুমার নন্দী জানিয়েছেন তাকে সহকর্মী হিসেবে পেয়ে তারা সকলেই গর্বিত একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে যে সকল গুন গুলো থাকা দরকার তা সবই রয়েছে তার মধ্যে।





বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাধব চন্দ্র চট্টপাধ্যায় জানান তিনি চোখে দেখতে না পেলেও তার অন্যান্য অঙ্গ অতি সক্রিয়।বিদ্যালয়ে কবে কোন দিবসে কি অনুষ্ঠান হয়েছিলো। কোন ছাত্রছাত্রীর কি নাম সব তার মুখস্থ।বিদ্যালয়ে কারোর কোনো বিষয়ে সমস্যা হলে সকলেই তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলে অনায়াসে তার সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।গোটা বিদ্যালয়ের সব তথ্য তার মস্তিষ্কে রয়েছে।বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষক যা করতে পারেন তিনি সবই করতে পারেন।শুধু ব্লাক বোর্ডে লিখতে অসুবিধা হয়।সেটা ক্লাসের কোনো এক ছাত্র ছাত্রীকে দিয়ে করান।তবে এই কাজ টা করতে কোনো ছাত্র ছাত্রীর বিরক্তি নেই।





অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র প্রীতম লাহা জানিয়ে পড়াশোনার ক্ষেত্রে তাদের কোনো সমস্যা হয় না। যেভাবে তিনি ইংরাজি পরান ছাত্র ছাত্রীরা সহজেই বুঝতে পারে।ক্লাসে কত ছাত্র ছাত্রী আছে কার কি নাম সবই তার মুখস্থ।যেমন ছাত্র ছাত্রীদের  সাথে তার ভালো সম্পর্ক রয়েছে।তেমন তাকে পেয়ে গর্বিত বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও। শিক্ষক দিবসের দিনে তাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সহ এলাকার মানুষ।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad