পঞ্চায়েত ভোটের আগে কৃষিপ্রধান জেলা বর্ধমানে এসে কল্পতরু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। সোমবার বর্ধমানের গোদার হেল্থসিটির মাঠে প্রশাসনিক সভায় বক্তব্য রাখেন তিনি।সভায় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ; মলয় ঘটক; স্বপন দেবনাথ।ছিলেন জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা, পূর্ব বর্ধমান জেলাপরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধারা, সভাস্থলে আগত ব্যক্তিদের জন্য তিনটি বড় বড় শেড তৈরীর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর জন্য তৈরী হয় হেলিপ্যাড। যদিও তিনি সড়কযোগে বর্ধমান আসেন।
সভা শেষে পশ্চিম বর্ধমান সফরে বেরিয়ে যান। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী সভাস্থল থেকে ২২ জন কৃষককে সম্মান জানান । এই সন্মানগুলির মধ্যে আছে মৃত কৃষকদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যে, কৃষক বন্ধু প্রকল্পের মাধ্যমে সাহায্য, কাস্টম হায়ার সেন্টার থেকে যন্ত্রপাতি নেওয়ার জন্য সাহায্য এবং স্প্রিং কলার প্রাপক কৃষকদের সুবিধা প্রদান । জানা গেছে, মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চ থেকে ২২ জন কৃষককে সন্মান জানানোর পর জেলার বিভিন্ন ব্লকে এই কৃষক পরিষেবাগুলি চালু হয়ে যাবে।
নতুন কৃষক বন্ধু প্রকল্পসহ অন্যান্য সহায়তা প্রদান কর্মসূচিগুলির সূচনা হল মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়ে। খরিফ মরশুমের জন্য নয়া কৃষক বন্ধু প্রকল্পের উদ্বোধন নানা দিক রয়েছে কৃষককে সাহায্য করতে।মোট ৮৯ লক্ষ কৃষককে ২৪৮৫ কোটি টাকা সাহায্য প্রদান করা হবে। এই হিসেব গোটা রাজ্যের।এছাড়াও কৃষি যন্ত্রায়ণ, মৃত্যুজনিত সহায়তা,সারা বাংলা কৃষি সেচ যোজনা সহ কৃষি পরিকাঠামো প্রদানের উপভোক্তাদের সাহায্য দেওয়া হবে।
বিধানসভা ভোটের পর মুখ্যমন্ত্রী আবার বর্ধমানে এলেন । গোটা কর্মসূচিতে কৃষিতে গুরুত্বের ছাপ। স্বাভাবিকভাবেই কৃষি প্রধান জেলা পূর্ব বর্ধমানের মানুষের বিশেষ আগ্রহ তৈরি হয়। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যেও তাই কৃষিভিত্তিক পরিকল্পনার কথাই উঠে এল।এদিন তিনি বলেন ,সরকারি অফিসে কেউ কৃষকদের কাজ না করলে ডি এমকে বলবেন।কৃষকরা যাতে সাহায্যগুলি ঠিকমতো পান তা দেখতে হবে।
বীরভূমের দেউচা পাচামি প্রকল্পে বীরভূম বর্ধমানের লোকেরা অনেক কাজ পাবেন।অনেক প্রকল্প আছে।কন্যাশ্রী থেকে রূপশ্রী।সব প্রকল্প পাবেন।বিনামূল্যে চাল পাবেন।২০২৪ এর মধ্যে সব গ্রামে সব ঘরে জল পৌঁছে যাবে।কালনা রাণাঘাট ব্রীজ হচ্ছে।নবদ্বীপ শান্তিপুর দূরত্ব কমবে।প্যারালাল রাস্তা তৈরি হচ্ছে উত্তরবঙ্গ অবধি।যার শুরু মেদিনীপুর থেকে।৩৪৭০০০ বাড়িতে পানীয় জল পৌছে যাচ্ছে এ জেলায়।সীতাভোগ ল্যাংচা মিহিদানা, ধান জেলার গর্ব। আমরা চাই এখানে এই জেলাতেও কারখানা হোক।এগ্রি ইন্ডাস্ট্রির মধ্য দিয়ে বর্ধমানকে এগিয়ে নেওয়া হবে।
হেলিপ্যাডটা ভাল করে হবে।পূর্ত দপ্তরকে বলা হয়েছে। পাকাপাকি হেলিপ্যাড গড়া হবে এখানে।তিনি এদিন আরো কিছু ঘোষণা করেন। যার মধ্যে আছে,১০ লাখ টাকার স্মার্ট কার্ড ছাত্রদের জন্য, উচ্চ মাধ্যমিকে ট্যাব দেওয়া হবে।৮০০০ টাকার ফোন আই সি ডি এস ও আশার মেয়েরা পাবেন।বিধবা, কৃষক তপশিলী আদিবাসী পেনশন দেওয়া চলেছ।লক্ষীর ভাণ্ডার পাচ্ছেন মেয়েরা।বিধবা ভাতা ৬০ এর উপরে যারা তারা পাবেন।
তিনি আরো বলেন ,জমি মিউটেশনের কাগজ তাড়াতাড়ি দিতে হবে।দ্রুত দিতে হবে কাস্ট সার্টিফিকেট। দামোদর অববাহিকায় ৩০০০ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।সবশেষে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপি দলকে একহাত নেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন ,বিজেপি সরকার একশো দিনের কাজের টাকা দিচ্ছে না।বাংলার বাড়ি,বাংলার সড়ক প্রকল্পের টাকা দিচ্ছে না।এম পিরা গেছে।দরকারে আমিও যাবো।
বাংলার নামে প্রকল্প থাকলে কী আপত্তি ওদের? ভোটের আগে দল ধর্ম ভাগ করবেন আর প্রকল্প হলেই আপত্তি? তিনি বলেন, আমরা বাংলার কথা বারবার বলব।তিনি বর্ধমানের বিজেপি সাংসদের নাম না করেও বলেন,বিজেপির এম পির চেহারা দেখেছেন ভোটের পর? আমাদের কেউ অন্যায় করলে চড় মারতে পারি।ভোটে এলেই বারবার কেন্দ্র ইডি, সি বি আই দিয়ে কেন ভয় দেখাবেন? এভাবে ওরা প্রশ্ন তোলা বন্ধ করতে চাইছে।