সংবাদাতা ,পূর্ব বর্ধমান:- ইউক্রেনের ভারতীয় ছাত্রীদের অবর্ননীয় দুর্গতির কাহিনী অনেক শুনেছেন। এবারে বর্ধমানের আয়ূষী আগরওয়ালের দুর্ভোগের কাহিনিও অনেকটা কষ্টের।তার সাথে আরো কষ্টের প্রায় সত্তর কিলোমিটার পায়ে হেঁটে তবে নিরাপত্তার আশ্রয়ে পৌঁছানো।এই দুর্ভোগ পেরিয়ে বর্ধমানের উল্লাসের অ্যাপার্টমেন্টের ঘেরাটোপে বসেও উদ্বেগের রেশ কাটেনি এখনো।
বর্ধমানের উল্লাসের বাসিন্দা আয়ূষী আগরওয়াল। ছ'মাস আগে সে গিয়েছিল ইউক্রেনের টর্নোফিল সিটির মেডিকেল কলেজে ডাক্তারি পড়তে। হঠাৎই রাশিয়া আর ইউক্রেনের যুদ্ধ বাজায় অন্য অনেক ছাত্রছাত্রীদের মত তারও মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। সে জানায়, বাড়ির ছাদে জেট প্লেন উড়ে যেত। দিনরাত চব্বিশ ঘন্টা সাইরেনের শব্দ উৎকন্ঠা আরো বাড়িয়ে দিত। ওই এলাকায় অনেক বাড়িতেই বাংকার আছে। ভয়ে সেই বাংকারেও কাটাতে হয়েছে কয়েকটা দিন।
তারপর ইউক্রেন ছাড়ার সংকল্প নেয় তারা।কিন্তু ফিরবো বললেই তো আর ফেরা যায় না।প্রথমে একটা বাসে করে রওয়ানা হয় তারা পোল্যান্ডের অভিমুখে।কিন্তু সতেরো ঘন্টা টানা জার্নির পর যানজটে বাস আটকে পড়ে। এরপর টানা পঞ্চাশ কিলোমিটার হাঁটা। মাইনাস ১৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা ভয়ংকর সে অভিজ্ঞতা।
সে জানিয়েছে, এ কদিন তাদের কাছে কোনো খাবার দাবার ছিল না। ছিল না পানীয় জল টুকুও। ভাগ্যক্রমে তাদের পিঠে রুকস্যাকে কিছু শুকনো খাবার, বিস্কুট , কুকিজ ইত্যাদি ছিল। তাই খেয়েই কেটেছে ক'টাদিন। পোল্যান্ডে এসে আরো বেশ খানিক পথ পেরিয়ে তারা সীমান্তে আসে। সে জানায়, তাদের সিটির চেয়ে অন্যান্য জায়গায় পরিস্থিতি আরো খারাপ ছিল।অনেক জায়গায় রাশিয়ার পতাকা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পোল্যান্ডে আসার পর ইন্ডিয়ান অ্যাম্বাসির সাহায্য আসে। খাবার থেকে সবকিছুর ব্যবস্থা হয়। এরপর তারা দেশে ফিরে আসেন।
পেশায় ব্যবসায়ী বিদ্যুৎ আগরওয়াল আর সুইটি আগরওয়ালের বড় মেয়ে আয়ূশি।সুইটি আগরওয়াল জানান,যুদ্ধ শুরুর দিন থেকে তাদের উদ্বেগের সীমা ছিল না। তবে তিনি জানান, নানা ভাবে এর ওর সাহায্য নিয়ে যোগাযোগ রেখে গেছে মেয়ে। বিকল্প ফোন নম্বরও দিয়ে রেখেছিল। তিনি জানিয়েছেন , দেশে ফেরার আগে খুব সাহায্য করেছেন ভারত সরকার। দেশে ফেরার পরে একেবারে বাড়ি অবধি আসতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।