সোমনাথ মুখার্জী, পাণ্ডবেশ্বর :- পুলিশি অভিযানে পাণ্ডবেশ্বর এর ডালুড়বাধ এলাকা থেকে উদ্ধার হলো প্রচুর পরিমাণ কার্তুজ ও দেশি রাইফেলের মত দেখতে পাইপ গান । ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য । শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতর । রামপুরহাট কাণ্ডের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি পুলিশকে রাজ্যজুড়ে বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপরই তৎপর হয়েছে পুলিশ প্রশাসন। ইতিমধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছে বোমা সহ বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র ।
পাণ্ডবেশ্বর থানা এলাকা ও এর ব্যতিক্রম নয়। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রবিবার গভীর রাতে পাণ্ডবেশ্বর থানার পুলিশ অভিযান চালায় কেন্দ্রা পঞ্চায়েতের ডালুর বাঁধ আট নম্বর এলাকায় । স্থানীয় সঞ্জয় মোদির ঘর থেকে উদ্ধার হয় ৭০ রাউন্ড কার্তুজ ও ছ'টি দেশি রাইফেলের মত দেখতে পাইপ গান । বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র মজুদ করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় সঞ্জয় মোদিকে । অভিযুক্ত বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করেন ইসিএলের পাণ্ডবেশ্বর এরিয়ায় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে । সোমবার পাণ্ডবেশ্বর থানায় অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে বিস্তারিত জানান আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট এর এসিপি অন্ডাল তহীদ আনোয়ার ।
কদিন আগেই পাণ্ডবেশ্বরের নাকা চেকিংয়ের উদ্ধার হয়েছিল লক্ষাধিক টাকা আজ উদ্ধার প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র ও কার্তুজ । এই ঘটনা প্রসঙ্গে পান্ডবেশ্বর বিধানসভার বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী জানান ,'গত বিধানসভা ভোটে বিজেপির লোকেরা এলাকায় অস্ত্র এবং টাকার বলে ভোটে জিততে চেয়েছিল। আমরা পুলিশের কাছে অনুরোধ করেছিলাম এবারের ভোটে কোনোভাবে এলাকায় অস্ত্র ঢোকানো চলবে না এবং বাইরে থেকে টাকা ও আসা বন্ধ করতে হবে । নরেনবাবু বলেন পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে ব্যাপারটি দেখে । ফলে কদিন আগেই পাণ্ডবেশ্বর থেকে উদ্ধার হয়েছে লক্ষাধিক টাকা। আজকে পাণ্ডবেশ্বরের ডালুর বাঁধে এক বিজেপি কর্মীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় প্রচুর অস্ত্র ।ঘটনায় প্রমাণ করে বিজেপি ভোটের আগে এলাকায় অশান্তি ছড়াতে চায়'। পুলিশের এই সুন্দর কাজের জন্য পুলিশকে ধন্যবাদ জানান বিধায়ক ।
অন্যদিকে পশ্চিম বর্ধমান জেলার বিজেপির সহসভাপতি ছোটন চক্রবর্তী তৃণমূলের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন 'ধৃত ব্যক্তি কোনো দিনই বিজেপির সাথে যুক্ত ছিলেন না । তাদের বিরুদ্ধে অহেতুক বদনাম করার চেষ্টা চলছে।' তিনি এও জানান রামপুরহাট কাণ্ডের পর মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে পুলিসকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বেআইনিভাবে মজুত রাখা অস্ত্র উদ্ধার করার জন্য ।তারপর থেকেই তৎপর পুলিশ জায়গায় জায়গায় শুরু করেছে অস্ত্র উদ্ধার । ছোটন বাবু প্রশ্ন করেন মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশের পরই পুলিশের এই তৎপরতা । উদ্ধার হয়েছে দিকে দিকে অস্ত্র। তাহলে এতদিন তৎপর পুলিশ কোথায় ছিল ? ছোটন বাবু এও বলেন এটা তৃণমূলেরই নিজেদেরই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রকাশ । আসন্ন আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে গোলমাল পাকানোর জন্য নিজেরাই অস্ত্র রেখেছিল । পুলিশি তৎপরতায় সেগুলি ধরা পড়ছে ।