Type Here to Get Search Results !

Purba Bardhaman:সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন উইনিট থাকা স্কুলে পাঠানো হয়েছে প্রায় লাখ টাকার বিদ্যুৎ বিল,বিল না মেটানোয় ৩ মাস ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন স্কুলে



সংবাদাতা পূর্ব বর্ধমান:- সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন উইনিট থাকা স্কুলে পাঠানো হয়েছে প্রায় লাখ টাকার বিদ্যুৎ বিল।বিল না মেটানোয়  ৩ মাস ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন পূর্ব বর্ধমানের রায়নার স্কুল। বিদ্যুৎতের চাহিদা মেটানোর জন্য বিদ্যালয়ে রয়েছে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের ইউনিট।তা সত্ত্বেও বিদ্যুৎ দফতর  রায়নার একলক্ষ্মী উচ্চ বিদ্যালয়ে পাঠিয়েছে প্রায় লাখ টাকার বিদ্যুৎ বিল।



শুধু এত বিশাল পরিমান টাকার বিদ্যুৎ বিল পাঠানোই নয়।বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই বিল সংশোধনের আবেদন করার পর উল্টে বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগই বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।তার কারণে এখন বিদ্যালয়ে পঠন পাঠন জারি রাখার ক্ষেত্রে তৈরি হয়েছে চুড়ান্ত অচলাবস্থা।বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ ও স্কুল দফতর সহ প্রশাসনের নানা মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বিদ্যালের প্রধান শিক্ষক।কিন্তু সুরাহার কোন ব্যবস্থা হয় নি।সামনেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা।সেই কথা মাথায় রেখে প্রশাসন কি ব্যবস্থা করে সেই দিকেই এখন তাকিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পড়ুয়ারা । 



বিদ্যালয় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকার  কারণ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক মহম্মদ মইদুল হক জানান,প্রথম থেকেই রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরের দেওয়া বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল  তাঁর বিদ্যালয়ে।পরবর্তী সময়ে রাজ্য সরকার বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎতের চাহিদা মেটাতে  সৌরশক্তির উপর ভরসা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়।সেই মত  ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে বিদ্যালয়ে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের ইউনিট চালু হয়। সেই  সৌরবিদ্যুৎ ইউনিট থেকে বিদ্যালয়ও বিদ্যুৎ সংযোগ পায়।

তার পরেই বিদ্যুৎ দফতর বিদ্যালয়ে থাকা আগের মিটার রিডিং যন্ত্রটি খুলে নিয়ে ’নেট’  মিটার যন্ত্র লাগিয়ে দেয়।ওই ’নেট’ মিটার যন্ত্র লাগানোর পর থেকে দীর্ঘদিন কেটে গেলেও  বিদ্যুৎ দফতরের কেউ মিটার রিডিং দেখতে আসে নি ।তারই মধ্যে করোনা অতিমারির প্রভাব বেড়ে যায়।  রাজ্য সরকার স্কুল বন্ধ রাখার  নির্দেশ দিলে ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে একলক্ষ্মী উচ্চ বিদ্যালয়ও  বন্ধ থাকে। 



এর পরেও ২০২১ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত বিদ্যুৎ দফতরের লোকজন মিটার রিডিং সংগ্রহ করতে আসে নি।বিষয়টি নিয়ে তিনি বিদ্যুৎ দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তার পর বিদ্যুৎ দফতরের লোকজন মিটার রিডিং নিয়ে যায়।পরে তারা ৯৮ হজার ৭৮৮ টাকার বিদ্যুৎ বিল বিদ্যালয়ে পাঠায়।এত বিপুল পরিমাণ টাকার বিল সঠিক মনে না হওয়ায় এরপর তিনি বিল সংশোধনের জন্য বিদ্যুৎ দফতরে লিখিত আবেদন করেন।কিন্তু সেই আবেদন গ্রাহ্য না করে উল্টে বিদ্যুৎ দফতরের কোন নোটিশ না দিয়েই ২০২১ সালের ২৫ ডিসেম্বর লোকজন পাঠিয়ে বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। 



এদিকে বিদ্যুৎ না থাকার তার কারণে এখন বিদ্যালয়ের পঠন পাঠন চালু রাখা নিয়ে তৈরি হয়েছে অচলাবস্থা।পড়ুয়ারা জানিয়েছে ,বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ না থাকায় তাঁরা কম্পিউটার ক্লাস করতে পারছে না।পাম্প না চলায়  স্কুলে পানীয় জলও পাওয়া যাচ্ছে না।এমনকি জলের অভাবে সাফাই কাজ বন্ধ থাকায় স্কুলের শৌচাগার ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে গিয়েছে।



মিড ডে মিল রান্না করার জন্য দূর থেকে জল আনাতে হচ্ছে।এছাড়াও পড়ুয়াদের সরকারী সুযোগ সুবিধা পাবার জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষে অনলাইনে যে যে বিষয়ে আবেদন করতে হয় সেই কাজও  করতে পারা যাচ্ছেন না বলে পড়ুয়ারা অভিযোগ করেছে । 



বিদ্যুৎ বিল সঠিক মনে না হওয়ার কারণ নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে প্রধান শিক্ষক মহম্মদ মইদুল হক বলেন ,বিদ্যালয়ে থাকা সৌরবিদ্যুৎ ইউনিট থেকে কতটা বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় তার হিসাব ’নেট’ মিটার যন্ত্রে দেখা যায়।উৎপাদিত বিদ্যুৎ বিদ্যালয় তার প্রয়োজন মত ব্যবহার করার পর বাকি সবটা বিদ্যুৎ দফতর নিয়ে নেয়।অতিমারির কারণে প্রায় দু’বছর ধরে  বিদ্যালয় বন্ধ  ছিল।তাহলে আমাদের বিদ্যালয় বিদ্যুৎ খরচ করলো কোথায়!প্রধান শিক্ষক এও দাবি করেন, অতিমারির কারণে তাঁদের বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সময়ে উৎপাদিত সমস্ত সৌরবিদ্যুৎ বিদ্যুৎ দফতরই গ্রহন করেছে।

কিন্তু বিলে বিদ্যুৎ দফতর কতটা সৌরবিদ্যুৎ গ্রহন করেছে আর বিদ্যালয় কতটা বিদ্যুৎ খরচ করেছে তার কোন  হিসাবও দেওয়া হয় নি।’নেট’ মিটারে উৎপাদিত সৌরবিদ্যুৎতের যে হিসাব  ধরা পড়েছে তার সবটাই একলক্ষ্মী উচ্চ  বিদ্যালয় ব্যবহার করেছে দেখিয়ে মনগড়া বিল তৈরি করে বিদ্যুৎ দফতর বিদ্যালয়ে পাঠিয়েছে বলে প্রধান শিক্ষক দাবি করেন ।  



বিল পাবার পর তিনি সৌরবিদ্যুৎ বিভাগের(ডাব্লু বি আর ই ডি এ)সুপারেনটেন্ডেন্ট ইঞ্জিয়ার পি সি রাউথ কে বিস্তারিত জানান।উনি সবকিছু খতিয়ে দেখে জানান,’নেট’ মিটার রিডিং ফলো করে ডাব্লু বি এ সি ডি সি এল বিল পাঠিয়েছে ঠিকই।কিন্তু  সিস্টেম মেনে ওই বিলে উৎপাদিত সৌর বিদ্যুৎতের পরিমাণ ও স্কুল কতটা বিদ্যুৎ ব্যয় করেছে তার হিসাব আলাদা করা হয় নি । তার কারণেই এই সমস্যা তেরি হয়েছে।প্রধান শিক্ষক বলেন,সুপারেনটেন্ডেন্ট ইঞ্জিয়ার তাঁকে জানিয়েছেন,এমন সমস্যা শুধু একলক্ষ্মী উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেই তৈরি হয় নি। রায়না ও ভাতার এলাকার আরও তিনটি বিদ্যালয় সহ রাজ্যের ১৪ টি বিদ্যালয়ে এমন সমস্যা দেখা দিয়েছে ।''



এই বিষয়ে যদিও বিদ্যুৎ দফতরের রায়নার সেহারাবাজারের স্টেশন ম্যানেজার কোনকিছু জানাতে অস্বীকার করেন।তবে রায়না ২ নম্বর ব্লকের বিডিও অনিষা যশ জানিয়েছেন, সমস্যার সমাধানে আগামী মঙ্গলবার তিনি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ,বিদ্যুৎ দফতর ও পঞ্চায়েত সমিতির কার্যকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর আগে একলক্ষ্মী উচ্চ বিদ্যালয় যাতে বিদ্যুৎ সংযোগ পায় সেই ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে’।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad