তনুশ্রী চৌধুরী,কাঁকসা:- করোনার জেরে বন্ধ রাখা হয়েছে এবছর পানাগড়ের বহু প্রাচীন মুড়ি মেলা।প্রতিবছরের মত এবছরও পানাগড় বাইপাশ সংলগ্ন এলাকায় মকর সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে গৈধারা মন্দির সংলগ্ন এলাকায় মেলা বসার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে প্রসাশনের নির্দেশে মেলা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয় খেলা কমিটির সদস্যরা। গৈ ধারা মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সমগ্র কাঁকসায় মেলা বন্ধের কথা ঘোষণা করা হয় মাইকে প্রচার করে।
মেলা কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন যে ভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে নিত্যদিন পাশাপাশি প্রশাসনের নির্দেশ মেনে করোনার সংক্রমণ রুখতে মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।শুধু মাত্র মেলা প্রাঙ্গনে পুজোর ব্যবস্থা করা হয়েছে রীতি মেনে। তবে পুজো দিতে গেলে দূরত্ব বিধি মেনে পুজো দিতে হবে। তাই সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকায় মেলা বন্ধের চলছে মাইকে প্রচার।
কমিটির সদস্য রবি মেটে ও মহেশ্বর মেটে জানিয়েছেন প্রতি বছর মকর সংক্রান্তির দিনে মন্দির সংলগ্ন জলাশয়ে মকর স্নান করে হাজার হাজার মানুষ গৈ ধারা মন্দিরে পুজো দিতে মেলায় ভিড় জমান। শীতের মরশুমে ওই মেলায় মুড়ি আর তেলে ভাজা খেয়ে সপরিবার পিকনিকের আমেজ উপভোগ করতে আসেন। কাঁকসা ছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এই মেলায় ভিড় জমায়।তাই আগেভাবে মানুষকে মেলা বন্ধের কথা না জানালে মানুষ সকাল থেকেই সেখানে ভিড় জমিয়ে ফেলবেন।
সেই কারণে ইতিমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় মাইকে প্রচার করা হয়েছে।তাছাড়াও মকর সংক্রান্তির দিনে কমিটির সদস্যরা নজর রাখবেন যাতে কেউ মেলায় প্রবেশ করতে না পারে। শুধু মাত্র মেলা প্রাঙ্গনে পুজোর ব্যবস্থা করা হয়েছে রীতি মেনে। করোনার বিধি নিষেধ মেনে যারা পুজো দিতে আসবেন তাদের কেই শুধু মেলায় প্রবেশ করানো হবে।
কমিটির সদস্য রবি মেটে জানিয়েছেন এই মেলা বহু প্রাচীন।এই মেলার সূচনা করেছিলো এলাকার রাখাল রা। শোনা যায় মকর সংক্রান্তির দিনে রাখাল রা গরু নিয়ে মাঠে চড়াতে যেতো। তাই মকর সংক্রান্তির দিনে যখন অন্যরা নানান জায়গায় মকর স্নানে যেতো তখন নিরুপায় হয়ে এলাকার রাখাল রা গামছায় করে মুড়ি আর তেলেভাজা নিয়ে গৈ ধারা মন্দির সংলগ্ন জলাশয়ে মকর স্নান সেরে মন্দিরে পুজো দিয়ে সেখানে মুড়ি আর তেলেভাজা খেয়েই মকর সংক্রান্তি পালন করতো।
বছর কয়েক পরে এলাকার মানুষরাও সেখানে পুজো দিতে যেতো স্বপ্নাদেস পেয়ে। ধীরে ধীরে মানুষের ভিড় বাড়তেই একটি দুটি করে দোকান বসতে শুরু করে।যা পরে বৃহদ আকারে মেলায় পরিণত হয়।শোনা যায় মন্দির সংলগ্ন জলাশয়ে কোনো নিঃসন্তান দম্পতি দেবীর কাছে মানসিক করে জলাশয়ে ডুব দিয়ে মাটি হাতড়ে যা পেতো সেটি তারা রেখে দিতো।পরে তাদের সন্তান হলে পুনরায় জলাশয় থেকে পাওয়া জিনিস ফের জলে ডুব দিয়ে জলেই দিয়ে আসতে হতো। এমন ধরনের অলৌকির কাহিনী জড়িয়ে আছে এই মন্দির নিয়ে।