তনুশ্রী চৌধুরী,পানাগড়:- ইস্টার্ন রেলওয়ে তৃণমূল মেন্স কংগ্রেস সংগঠনের পানাগড় শাখার সূচনা হলো রবিবার। এদিন সংগঠনের শাখার সূচনা করেন রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি তথা সাংসদ দোলা সেন, এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের জেনারেল সেক্রেটারি বিজয় বাহাদুর সিং,রাজ্য সহ সভাপতি সমর মুখার্জি,পানাগড় শাখার সেক্রেটারি চন্দ্রনাথ চ্যাটার্জি, কাঁকসা ব্লকের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দেবদাস বক্সী,পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি সমীর বিশ্বাস,কাঁকসা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শুক্লা সিং সহ অন্যান্যরা।
পানাগড় শাখার সেক্রেটারি চন্দ্রনাথ চ্যাটার্জি জানিয়েছেন ইস্টার্ন রেলওয়ে তৃণমূল মেন্স কংগ্রেস শাখার সূচনা হওয়ার ফলে আগামীদিনে তাদের লড়াই করার ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা হবে।আগামী দিনে তাদের সংগঠনে অন্যান্য সংগঠন থেকে রেলের শ্রমিকরা যোগদান করার জন্য এগিয়ে এসেছে।আজ সভা মঞ্চ থেকে বেশ কয়েকজন শ্রমিক তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনে যোগদান করেন।
কেন্দ্র সরকার রেল কে বেসরকারিকরণ করার যে চক্রান্ত করেছে তার বিরুধ্যে আগামী দিনে তাদের লড়াই আরো জোরদার হবে। শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ রেখে তার বদলে দুজন শ্রমিকের কাজ একজন শ্রমিকের উপরে চাপিয়ে দিয়ে শ্রমিকদের শোষণ করে চলেছে রেল দফতর তার প্রতিবাদেও আন্দোলন আগামী দিনে জোরদার হবে ।
সভা মঞ্চ থেকে দোলা সেন বলেন কেন্দ্র সরকারের চাকরিতে থাকলে সেন্ট্রাল ট্রেড ইউনিয়নের থাকলে পদোন্নতি থেকে শুরু করে বদলি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা হয়। সেই জন্য যারা তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক এবং কর্মীরা তাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা রেলে কাজ করেন এবং চাকরির ক্ষেত্রে তাদের অন্যান্য সংগঠনের সদস্য হয়ে থাকতে হয়। এবার দিন বদলেছে বিরোধীদের প্রধান মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যারা এখনো অন্যান্য সংগঠনের রয়েছে তাদেরকে তৃণমূল সংগঠনে আসার জন্য আহবান করেন দোলা সেন।
পাশাপাশি এদিন তিনি বলেন কেন্দ্র সরকার সবকিছুই বিক্রি করে দিচ্ছে। বিজেপি সরকার বলে মেক ইন ইন্ডিয়া আসলে যে হারে দেশের সবকিছু তারা বিক্রি করতে চাইছে। আর কিছুদিন পরে তাদেরকে বলা হবে সেল ইন্ডিয়া এবং মোদি বাবুকে বেচুবাবু বলে ডাকা হবে।সামনে বেশ কয়েকটি রাজ্যে নির্বাচন রয়েছে তাই এখনই এনআরসি হবে না এমনটাই ঘোষণা করেছে মোদি বাবু।আসলে নির্বাচনে যাওয়ার ভয়ে এনআরসি হবে না বলে জানানো হয়েছে। তিনি বলেন যেটা লাগু হবে না সেটা কেন আগে থেকে ঘোষণা হয়েছিল। আসলে মোদি বাবু নিজের মন কাজ করছেন।
এনআরসি প্রসঙ্গে বলেন প্রতিবেশী রাজ্য আসামে এনআরসির নামে ডিটেনশন ক্যাম্প গড়ার জন্য সেখানে প্রায় 200 জন আসামের মানুষের মৃত্যু হয়েছে।এদিন মঞ্চ থেকে কৃষি আইন সম্পর্কে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে হিটলার বলে কটাক্ষ করলেন দোলা সেন।কৃষি আইনের বিরোধিতা করতে গিয়ে এখনো পর্যন্ত সাড়ে ৭০০ জন কৃষক মারা গেছেন নানানভাবে।
তিনি আরো বলেন প্রধানমন্ত্রী ক্ষমা চেয়ে কৃষি বিল প্রত্যাহার করার ঘোষণা করেছেন। কারণ সামনে উত্তর প্রদেশ পাঞ্জাব এবং অন্যান্য রাজ্যে নির্বাচন রয়েছে নির্বাচনে হারার ভয়ে তিনি কৃষি আইন প্রত্যাহার করার ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় যে কৃষকরা কৃষি আইন প্রত্যাহারের জন্য প্রাণ দিলেন তাদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী আজ ও দুঃখ প্রকাশ করলেন না। উনি নিজের মন মর্জি মোতাবেক কাজ করছেন।
আরো বলেন কালো টাকা উদ্ধার করতে গিয়ে দেশজুড়ে প্রধানমন্ত্রী নোট বন্দি ঘোষণা করলেন। নোট বন্দী করে ও কালো টাকা উদ্ধার হলো না। কিন্তু রাতারাতি নোট বদলাতে গিয়ে ব্যাংকের সামনে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে-থাকতে প্রায় দেড়শ জন মানুষ জীবন দিয়েছেন। তার এটা লজ্জা যে দেশের প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে একবারও লজ্জা বোধ হলো না।
আরো পড়ুন:- কাঁকসায় অনুষ্ঠিত হলো পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল হকার্স ইউনিয়নের সভা
এদিন তিনি আরো বলেন নিরাপত্তা রক্ষার জন্য দায়িত্বে থাকেন ভারতের সেনা জওয়ানরা। দেশ রক্ষার জন্য জওয়ানরা দেশের সীমানায় প্রাণ বিসর্জন দেন। সেনা বাহিনীর জন্য অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র তৈরির জন্য যে ডিফেন্স সেক্টর রয়েছে, সেই অস্ত্র কারখানায় যে ৭৪% বেসরকারিকরণ করে দেওয়া হয়েছে। অস্ত্র কারখানা গুলিতে লজ্জা রাখার আর কোনও জায়গা নেই সেই কারণে দেশের প্রধানমন্ত্রীর নিজের মনমানি হিটলারি তুঘলকী মোদি বাবুর কারণে।