Type Here to Get Search Results !

প্রায় ৭০০ বছরের পুরনো বুদবুদের মানকরের বড় মা কালী

তনুশ্রী চৌধুরী,পানাগড়:- প্রায় ৭০০ বছরের পুরনো বুদবুদের মানকরের বড় মা কালী।পরিবার সূত্রে জানা যায় এই পুজোর সূচনা করেন রামানন্দ গোস্বামী।তিনি মা কালীর একজন সাধক ছিলেন। ছোট থেকেই বেশিরভাগ সময় তিনি শ্মশানে পড়ে থাকতেন।

শোনা যায় তিনি নাকি মা কালীর দর্শন পেয়েছিলেন। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন বর্তমানে যেখানে মানকর ভট্টাচার্য্য পাড়া রয়েছে সেখানে একসময় ঘন জঙ্গল ছিল। সেই জঙ্গলেই সাধনা করতেন রামানন্দ গোস্বামী। কথিত আছে রামানন্দ গোস্বামী শ্মশানের মন্দিরে পঞ্চমুন্ডের আসন প্রতিষ্ঠা করে সেখানেই সাধনা করতেন। ওই স্থানেই তাকে জীবন্ত সমাধি দেওয়া হয়েছিল।

রমানন্দ গোস্বামীর রীতি অনুযায়ী আজও একই ভাবে পুজো হয়ে আসছে এখানে। আট রকমের ডাল কুড়ি শের এক পোয়া চালের অন্নভোগ, শাক থেকে সুক্ত, পুকুরের মাছ, গোবিন্দভোগ চালের পায়েস, পাঁচ সের করে দুটি কদমা সহ ইত্যাদি।

রীতি অনুসারে আজও এখানে পাঠা বলি দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন এক শাঁখারী মায়ের পুকুর পাড় দিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় পুকুর পাড়ে স্নান করছিলেন এক যুবতী। তিনি ওই শাঁখারির কাছে শাঁখা পড়তে চায়। শাঁখারি দু হাতে শাঁখা পরিয়ে দেয়।

এরপর ওই শাঁখারী ওই যুবতীর কাছে টাকা চাইলে তিনি শাঁখারি কে বলেন সামনে যে মন্দির দেখা যাচ্ছে সেই মন্দিরের কুলুঙ্গিতে টাকা রাখা আছে,তার বাবার নাম করে বলেন তার বাবাকে গিয়ে বললেই তার বাবা টাকা দিয়ে দেবে।

ওই শাঁখারী তার কথামতো বাণীকন্ঠ ঠাকুরের কাছে বলেন তাঁর মেয়ে তার কাছে শাঁখা পড়েছে এবং মন্দিরের ভিতরে একটি স্থানে টাকা রাখা আছে সেখান থেকে টাকা দিতে তাকে। বাণী কণ্ঠ ঠাকুর কথাটি শুনে হতবাক হয়ে যান। তিনি শাঁখারি কে জানান তার কোনো মেয়ে নেই। পরে তিনি মন্দিরের যে স্থানে টাকা রাখার কথা বলে ওই শাঁখারী। সেই স্থানে টাকা দেখতে পেয়ে সেই টাকা শাঁখারি কে দিয়ে দেন।

এরপর ওই শাঁখারী কে সাথে নিয়ে তিনি পুকুর ঘাটে গেলে পুকুরঘাটে কাউকে তিনি দেখতে পান নি। এরপর তিনি বুঝতে পারেন মা কালী ছদ্মবেশে এই শাঁখা পড়েছেন। তখন তিনি পুকুরের সামনে গিয়ে মা কালী কে শাঁখা পড়ার প্রমান দেখাতে বললে। পুকুরের মাঝখান থেকে মা কালী দুহাত তুলে শাখা দেখায়।

সেই দিন থেকে ওই শাঁখারী পরিবারের বংশধরেরা আজও রীতি মেনে পুজোর সময় শাখা দিয়ে যান মন্দিরে।জানা যায় এই মন্দিরে দেবী মূর্তি তৈরি করার কাজে সন্ধ্যা নামলেই দেবীমুর্তি তৈরীর কাজ বন্ধ রাখা হয়।

আরো পড়ুন:- ৫০০ বছরের প্রাচীন মানকরের ক্ষ্যাপাকালী আজও বাঁধা থাকে শিকল দিয়ে

কথিত আছে একবার এক মৃৎশিল্পী সন্ধ্যের পর দেবীর চক্ষু দান করেছিলেন সেই সময় এক অদৃশ্য হাত তার চুলের মুঠি ধরে বাইরে বের করে দিয়েছিল পরে মন্দিরের পাশে একটি তালগাছের তার মুখ ঘষে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। সেই থেকে আজও রাত্রে এই দেবীর মূর্তি তৈরি করা নিষিদ্ধ রয়েছে।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad