Type Here to Get Search Results !

৫০০ বছরের প্রাচীন মানকরের ক্ষ্যাপাকালী আজও বাঁধা থাকে শিকল দিয়ে


তনুশ্রী চৌধুরী,পানাগড়:- ৫০০ বছরের প্রাচীন মানকরের (Mankar) ক্ষ্যাপাকালী মাথায় ছাদ নেন না, আজও বাঁধা থাকে সিকলে। বুদবুদের মানকরের ক্ষ্যাপা কালী মাথায় ছাদ নেন না আজও । মন্দির তৈরি হলেও সেই মন্দিরে কোনো দিনও ছাদ তৈরি করা যায় নি। তাই পুজোর সময় অস্থায়ী ছাউনি বানিয়েই হয় পুজোর আয়োজন।

কথিত আছে মন্দিরে ছাদ তৈরির উদ্যোগ নিলেই মৃত্যু হয় সেই ব্যক্তির । তাই সাহস করে আর কেউ এই দেবীর মন্দিরের ছাদ তৈরি করেন নি । পরিবারের সুত্রে জানা গিয়েছে ১৮৮৫ সালে কালীদাস নায়েক নামে এক ব্যক্তি মন্দিরের ছাদ তৈরির উদ্যোগ নিলে তিনি ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যান । 

তারপরে আর কেউ সাহস করে মন্দিরের ছাদ তৈরির উদ্যোগ নেন নি । শুধু তাই নয়, এই দেবী অনাচার সহ্য করেন না । পরিবার সুত্রে জানা গিয়েছে ভুবনেশ্বরী দেবী দৌহিত্র সুমন্ত সারথি একদিন মায়ের পুকুরে মদ পান করে মাছ ধরতে নামেন পুকুরে ।এই পুকুরের জলেই মায়ের ভোগ রান্না হয় বলে কথিত আছে । এরপরেই সুমন্ত সারথি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান । 

৫০০ বছর আগে মানকরে জমিদার ছিলেন ভুবনেশ্বরী দেবী । ভুবনেশ্বরী দেবী মা কালীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে মায়ের পুজো শুরু করেন । প্রথমে তিনি নাককাটি শ্মশানে এক সুরঙ্গের মধ্যে দিয়ে গিয়ে শ্মশানে পুজো শুরু করেন । কিন্তু বর্ষাকালে সেখানে গিয়ে মায়ের পুজো করতে চরম সমস্যা হতো । 

এরপরে তিনি দেবীকে অনুরোধ করেন তার বাড়িতে আসার। আর সেখানেই ভুবনেশ্বরী দেবী কালীর পুজো নেওয়ার । দেবী স্বপ্নাদেশ দিয়ে জানান তিনি ভুবনেশ্বরীর বাড়িতে আসছেন । এবার মায়ের মন্দির আর জমিদার বাড়ি নির্মাণ শুরু হয় একসাথেই । কিন্তু মায়ের মন্দিরের আগে জমিদার বাড়ির ছাদ নির্মাণ হয় । এতেই রেগে যান দেবী । তারপরে দেবী আর মন্দিরের ছাদ হতে দেন নি বলেই মত পরিবারের সদস্যদের। 

মায়ের পুজো ভোগের এক বিশেষ নিয়ম রয়েছে । মায়ের পুকুর ভাস্কর পুকুরের সাতসের এক পোয়া মাছের টক , একটি বড় আকারের রুই মাছ ভাজা , সাত রকমের সরবত , সাত রকমের কলাই ভেজানো, চোদ্দ রকমের মিষ্টান্ন , পাঁচ সের এক পোয়া ওজনের কদমা , দু জায়গায় দু শলি চালের নৈবিদ্য , সাদা বা কালো রঙের পাঁঠা বলি দেওয়া হয় । আগে মদ দেওয়া হতো তবে এখন দেওয়া হয় ডাবের জল । 

সন্ধ্যার পর মায়ের মন্দিরের পাশ দিয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ রয়েছে আজও।বিসর্জনের সময় শোভাযাত্রা হয় না এই দেবীর।তবে কথিত আছে বাউরি সম্পদ্রদায়ের কেউ মূর্তির কাঠামো না ছুঁলে দেবীকে কেউ উঠাতে পারে না নিরঞ্জনের সময়।

আরোপড়ুন:- দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির বগির ছাদে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তি উঠে পড়ায় মঙ্গলবার ভর সন্ধ্যায় বিভ্রাট মশাগ্রাম স্টেশনে 

দেবী একটাই রাগী যে পুজোর সময় দেবীকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতে হয়।পরিবার সূত্রে জানা গেছে পুজোর পরেই দেবী নিজের স্থান ছেড়ে অন্যত্র সরে যান।বহুবার পরিবারের সদয়রা পুজো শেষ হলেই দেখতে পান দেবীর কাঠামো সরে গেছে অনেকটা দূরে।সেই থেকেই দেবীর কাঠামোর চার ধারে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতে হয়।সেই প্রচলন আজ চলে আসছে এখানে।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad