শুভময় পাত্র,বোলপুর:- প্রতি বছর ২৩ ডিসেম্বর শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লীর মাঠে শুরু হয় পৌষমেলা। ৪ দিন চলে এই মেলা৷ ২০২০ সালে করোনার প্রকোপে বন্ধ রাখতে হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা৷ পৌরসভার দাবি, বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে৷ তাই পুনরায় পৌষমেলা করা হোক৷
তাই এবার শান্তিনিকেতনে পৌষমেলা করতে চেয়ে বিশ্বভারতীর উপাচার্য ও শান্তিনিকেতন ট্রাস্টকে চিঠি দিল বোলপুর পৌরসভা। ঐতিহ্যবাহী শান্তিনিকেতন পৌষমেলা যাতে বন্ধ না হয়, তারই আবেদনের পাশাপাশি বোলপুর পৌরসভার আবেদন, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পৌষমেলা না করলে মাঠটি পৌরসভাকে দেওয়া হোক পৌষমেলার আয়োজন করার জন্য৷ সাংবাদিক বৈঠক করে জানালেন বোলপুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ।
এদিন বোলপুর পৌরসভার চেয়ারপারসন পর্না ঘোষ সহ প্রশাসনিক অধিকর্তারা বোলপুর মহকুমা শাসকের কাছে একটি বৈঠক করেন। তারপরেই সিদ্ধান্ত হয়েছে বিশ্বভারতী কতৃপক্ষ যদি এবছর পৌষ মেলা না করেন তাহলে বোলপুর পৌরসভা কে ৬ দিনের জন্য ওই মেলার মাঠে পৌষ মেলা করার অনুমতি যেন বোলপুর পৌরসভা কে দেয়। আর সেই মর্মে বোলপুর পৌরসভার পক্ষ থেকে বিশ্বভারতীর উপাচার্য কাছে আবেদনপত্র জমা পড়ে বোলপুর পৌরসভার পক্ষ থেকে।
তাতে পরিষ্কার ভাষায় লেখা আছে বোলপুরবাসী ও পুরসভা শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের নিয়ম ও নির্দেশ অনুযায়ী মেলার 125 তম বর্ষ সমাপ্তি উৎসবটি করতে চাই শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট যেভাবে কুড়ি হাজার টাকা দিয়ে মেলার মাঠ ব্যবহার করেন বোলপুর পৌরসভা ও সেই কুড়ি হাজার টাকা দিতে প্রস্তুত।
মেলার পরিষ্কার পরিছন্নতা ও সুরক্ষার সমস্ত দায়িত্ব বোলপুর পৌরসভা নেবেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি গ্রীন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশও পালন করা হবে বোলপুর পৌরসভার পক্ষ থেকে দেওয়া চিঠিতে লেখা আছে।
বোলপুরবাসীর পাশাপাশি সারা ভারত বর্ষ জুড়ে এই শান্তিনিকেতন পৌষ মেলা নিয়ে এক আবেগ জড়িত আছে। আর সেই কারণেই বোলপুর পৌরসভা এবারে বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে পৌষ মেলা করতে দেওয়ার অনুমতি চেয়ে বিশ্বভারতীর উপাচার্য ও শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট কে একটি লিখিত আবেদনপত্র পাঠান।আজ বোলপুর পৌরসভায় চেয়ারপারসন পর্ণা ঘোষ ও প্রশাসনিক অধিকর্তারা সাংবাদিক বৈঠক এর মধ্যে দিয়ে সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেন।
পৌষমেলা হল সংস্কৃতির মেলবন্ধন৷ এছাড়া, ব্যবসায়ীদের সারা বছরের রোজগারের একটা পথ এই মেলা৷ তাই পৌষমেলা যদি এবারও না হয়, তাহলে বোলপুর-শান্তিনিকেতন এলাকায় অর্থনীতিতে একটা ধ্বস নামবে এমনটা বলাই যায়৷ যদি, এবার পৌষমেলা না করা হয় তাহলে মেলা করার জন্য মাঠটি ব্যবহার করতে দেওয়া হোক। গঙ্গাসাগর মেলা ও বইমেলা যেভাবে কোভিড বিধি মেনে অনুষ্ঠিত হবে। ঠিক সেইভাবেই শান্তিনিকেতন পৌষমেলা করা হবে চিঠিতে অনুরোধ জানিয়েছে পুরসভা।
বিশ্বভারতী কতৃপক্ষ এবিষয়ে কোনো সদুত্তর না দিলেও। শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট জানিয়েছে, মেলা করার ইচ্ছা তাদেরও রয়েছে। তবে বিশ্বভারতী এখনো সম্পূর্ণভাবে খোলেনি। আংশিক খুলেছে। তাছাড়া, শান্তিনিকেতনকে ওয়াল্ড হ্যারিটেজ তকমা পাওয়ার জন্য ব্যস্ত বিশ্বভারতী। ন্যাকের প্রতিনিধি দল অনবরত আনাগোনাও করছে। তাই মেলা হবে কি না চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে আসেনি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।