Type Here to Get Search Results !

বিশ্ব আদিবাসী দিবস উদযাপন আসানসোল রবীন্দ্র ভবনে


নীলেশ দাস,আসানসোল :-অল ইন্ডিয়া আদিবাসী কো-ডিনেশন কমিটির উদ্যেগে সোমবার দুপুরে আসানসোল রবীন্দ্র ভবনর একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ তথা বিধায়ক তাপস ব্যানার্জি,আসানসোল পৌরনিগমের প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়,কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ উত্তম মণ্ডল,সাহিত্যিক ও লেখক দুর্গাদাস সরেন, প্রতিবাদী লেখক রামদাস মাড্ডী। এছাড়াও মতিলাল সরেন,দীপক মুদি টুডু এবং কিশোর কড়া।

এদিন বিশ্ব আদিবাসী দিবসে মূল বিষয় ছিল,আজ সারা বিশ্বেই আড়ম্বরের সহিত পালিত হচ্ছে , কিন্তু এই প্রসঙ্গে সব থেকে বড় প্রশ্ন রাষ্ট্রসংঘের সভ্য দেশগুলি এই'বিশ্ব আদিবাসী দিবস উদ্যাপনে সরকারীভাবে কতটা উদ্যোগ নিয়েছে বা নিচ্ছে । রাষ্ট্রসংঘ বিশ্ব আদিবাসী সমূহের জন্য কি কি কল্যাণ তথা উন্নয়ণ মূলক কর্মকান্ডের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং রাষ্ট্রসংঘ কর্তৃক রাষ্ট্রসংঘের সাথে যুক্ত সভ্য দেশগুলির জন্য আদিবাসীদের প্রতি কি ধরনের আচরণ করার নির্দেশিকা জারী হয়েছে । আমাদের দেশই বা তা কতটা পালন করার উদ্যোগ নিয়েছে , এমনকি রাজ্যেও এর কতটা প্রভাব পড়েছে । এইসব সমস্যা নিয়ে আলােচনার মাধ্যমেই ' বিশ্ব আদিবাসী দিবস' পালন করা হলো । 

অন্যদিকে আদিবাসী কমিটির সেক্রেটারি মতিলাল সরেন বলেন,আদিবাসীদের বেশ কিছু জায়গায় রয়েছে যা  হেরিটেজ বলে ঘোষণা করলেও বেশকিছু ভূমি মাফিয়ারা, স্থানীয় শাসক দল নেতার কাছে গিয়ে সামঞ্জস্য করে কয়লা তুলতে উদ্যোগী। আমরা তাদের বিরুদ্ধে লড়ছি,একটি কমিটি বানিয়েছি। অসতী বিসর্জনের ঘাট সংরক্ষণের জন্যে।  পাশাপাশি আদিবাসীদের শিক্ষা নিও এদিন বলেন,মূলত দাবি আদিবাসী রয়েছে সেটা রাষ্ট্রসঙ্ঘকে শিকার করতে হবে বলে জানান।

আরো পড়ুন :-

পাশাপাশি 'বিশ্ব আদিবাসী দিবসে' তুলে ধরে দাবি পত্র রূপে ঘােষিত হয় কিন্তু , অতি দুঃখের বিষয় ভারত সরকার এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রসংঘের কাছে স্বীকার করেনি যে ভারতবর্ষে আদিবাসী আছে বলে , বিশ্ব আদিবাসী দিবসের মর্যাদা দেওয়ার কথাত দূরস্থ। তাই ভারত সরকার ও রাজ্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে তাদের দাবি, ১ ) রাষ্ট্রসংঘ যেহেতু স্বীকার করেছে আদিবাসীদের কে বাঁচাতে হবে , যদি পৃথিবীকে বাঁচাতে চাই , তাই অবিলম্বে ভারত সরকার স্বীকার করুন রাষ্ট্রসংঘের কাছে ভারতবর্ষে আদিবাসী আছে। 2 ) জল , জঙ্গল ও জমির অধিকার থেকে আদিবাসীদের বঞ্চিত করা যাবে না ৩ ) অতি শীঘ্রয়  লাগু করতে হবে । ৪ ) আদিবাসীদের স্বায়ত্ব শাসন তথা আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী গ্রাম সভার মান্যতা দিতে হবে । ৫ ) অবিলম্বে আদিবাসীদের ধর্মীয় স্থান- জাহের থান , কবরস্থান রেকর্ড ভুক্ত করতে হবে । ৬ ) সর্বত্র এলেকার অবৈধ ভাবে হস্তান্তরিত আদিবাসীদের জমি দিকুদের কাছ থেকে ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্দ্যোগ সরকারকে নিতে হবে । ৭ ) হাড়াভাঙ্গা - ভামালিয়া আদিবাসী হড়তােপা ও জাংবাহা বুহেল ঘাটকে ' হেরিটেজ ' স্থান বলে ঘােষনা তথা রেকর্ড ভুক্ত ও সংস্কার করতে হবে । ৮ )  জাতীয় জল শংসাপত্র এবং নথি  বন্ধ করতে হবে । ৯ ) আসানসােল শহরে আদিবাসীদের আবাসিক বিদ্যালয় নির্মাণ করতে হবে । ১০ ) আদিবাসীদের সংস্কৃতি রক্ষার্থে আসানসােল শহরে আদিবাসীদের মিউজিয়াম করতে হবে । ১১ ) অবিলম্বে রাজ্যে মাদ্রাসা বাের্ডের ন্যায় সাঁওতালী বাের্ড গঠন করতে হবে বলে দাবি জানান ।

পাশাপাশি এদিন পশ্চিমবঙ্গ সরকার অনগ্রসর কল্যাণ ও আদিবাসী উন্নয়ন বিভাগের উদ্যোগে,সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির পরিচালনায় সালানপুর ব্লকের দেন্দুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বাথানবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ময়দানে অনুষ্ঠিত হলো পশ্চিম বর্ধমান জেলা বিশ্ব আদিবাসী দিবস।

এদিন প্রদ্বীপ জ্বালিয়ে ফিতে কেটে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন জেলা সভাধিপতি সুভদ্রা বাউরি,জেলাশাসক বিভু গোয়েল, অতিরিক্ত জেলাশাসক সন্দীপ টুডু,বারাবনি বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়,দুর্গাপুর পূর্ব বিধায়ক প্রদীপ মজুমদার,কর্মদক্ষ জেলা পরিষদ মোঃ আরমান,সদস্য জেলা পরিষদ কৈলাসপতি মন্ডল সহ আরো বিশিষ্ট ব্যাক্তিগণ।

এই দিনের অনুষ্ঠানে আদিবাসী সমাজের মোডোলদের সম্মানিত করা হয়,তাছাড়া অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জাতিপত্র এবং আদিবাসী সমাজে মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীদের সম্মানিত করা হয়।তাছাড়া আদি বাসী সমাজকে রাজ্য সরকারের প্রতিটি প্রকল্পগুলি নিয়ে সচেতন করতে অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে বেশ কয়ে কটি স্টল লাগানো হয়।

এই আদিবাসী অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে জেলা সভাধিপতি সুভদ্রা বাউরি বলেন আদিবাসী সমাজ রাজ্যের মধ্যে মূল অঙ্গ,এদের উন্নয়নের জন্য আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচুর প্রকল্প তৈরি করেছেন যার সুবিধা নিয়ে আজ আদিবাসী সমাজ এগিয়ে এসেছে।

এই আদিবাসী অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে জেলাশাসক বিভু গোয়েল বলেন  মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে করোনা বিধি মেনে আদি বাসী দিবস পালন করা হচ্ছে,এ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়েই আদিবাসী সমাজকে আরো সচেতন করতে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় আনতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং যেসব আদিবাসী মানুষজন এখন প্রকল্প গুলির সুবিধা পাচ্ছেন না তারা দুয়ারে সরকার প্রকল্পে গিয়ে নাম নথিভুক্ত করুন।

এই আদিবাসী অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে  বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় বলেন আদিবাসী সমাজের দেশের জন্য অনেক করেছেন,তাদের অবদান প্রচুর।তাই তাদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক গুলি প্রকল্প করেছেন এবং সর্বদায় তাদের পাশে রয়েছেন।সমস্ত রাজ্যবাসী আজ গর্বিত আদিবাসী সমাজ থেকে এত সুন্দর পরীক্ষার রেজাল্ট দেখা যাচ্ছে আমি চাই এরা আরো উন্নতি করুক।

এই আদিবাসী অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে দুর্গাপুর পূর্বের বিধায়ক প্রদীপ মজুমদার বলেন করোনা বিধি মেনে এত সুন্দর ভাবে একটা অনুষ্ঠান করা যায় তা দেখে আমি খুব খুশি।উ.এন.ও দ্বারা ১৯৯৪ সালে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে প্রতি বছর ৯আগস্ট দিনটি আদিবাসী দিবস উপলক্ষে পালন করা হবে। আদিবাসী সমাজের কাছে আজ কের এইদিন খুব বড় দিন,তাই এই দিনটি তারা প্রতি বছর পালন করে থাকে।তাছাড়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সমাজের জন্য প্রচুর উন্নয়ন করেছেন যেমন তাদের জন্য বিশেষ করে জয় জোহার প্রকল্প সহ আরো অনেক প্রকল্প রয়েছে,এখনও যারা প্রকল্পগুলির সুবিধা ভোগ করতে পারছে না তারাই শীঘ্রই নাম নথিভুক্ত করুন।

তাছাড়া এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ফাল্গুনী কর্ম কার ঘাসি,সহ সভাপতি বিদ্যুৎ মিশ্র,সালানপুর বিডিও অদিতি বসু,সমাজসেবী ভোলা সিং সহ সমস্ত পঞ্চায়েত প্রধান উপপ্রধান সহ সমিতির সদস্যগণ।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad