প্রশাসনের উদ্যোগে আট ঘন্টা পর কোভিডে আক্রান্ত মতদেহ উদ্ধার হল।দিনভর বাড়িতে পড়ে থাকলো দেহ। পাড়া প্রতিবেশী কেউ এগিয়ে না আসায় কোভিডে মৃত বধূর দেহ উদ্ধার করে দূরের শ্মশানে নিয়ে যেতে হল প্রশাসনকে।
করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়ার আতঙ্কে আতঙ্কিত গোটা গ্রাম । তাই কেউ এগিয়ে এলেন না কোভিডে আক্রান্ত মৃত বধূর দেহ সৎকারে।শুক্রবার সারাদিন বাড়িতেই পড়ে থাকলো পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার জামুদহ গ্রামের বধূ পম্পা নন্দীর মৃতদেহ।প্রশাসন মৃতদেহ উদ্ধারের ব্যবস্থা করলেও গ্রামের শ্মশানে মৃতদেহ সৎকারেও উঠলো আপত্তি।এই পরিস্থিতিতে এদিন সন্ধ্যায় অ্যাম্বুলেন্সে চাপিয়ে বধূর মৃতদেহ সৎকারের জন্যে নিয়ে যাওয়া বর্ধমানের নির্মলঝিল শ্মশানে । সেখানেও যাওয়ার ব্যাপারে পরিজনদের কেউ যেমন যাওয়ার আগ্রহ দেখালেন না তেমনই পাড়ার কেউও এগিয়ে এলেন না ।
জামালপুরের থানার বেরুগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম জামুদহ । এই গ্রামেই লশ্বশুর বাড়ি বছর ৩৬ বয়সী বধূ পম্পা নন্দীর ।তাঁর স্বামী ও একমাত্র অন্তঃসত্ত্বা মেয়েও কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন ।বধূর স্বামী তাঁর মেয়ের বাড়িতেই রয়েছেন। সম্প্রতি পম্পাদেবীর শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয় । তাঁর কোভিড পরীক্ষা করানো হলে গত ২৬ মে তাঁর কোভিড পজিটিভ ধরা পড়ে ।বাড়িতেই থেকেইকোভিডের ওষুধ পত্র খাচ্ছিলেন তিনি ।কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় ।শুক্রবার বাড়িতেই তার মূত্যু হয় । এরপর মহিলার মৃতদেহ সৎকার নিয়ে তৈরি হয় চরম জটিলতা।
বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার বলেন , ”এদিন দুপুর আনুমানিক ৩ টে নাগাদ খবর আসে জামুদহ গ্রামের এক কোভিডে মৃত মহিলার দেহ বাড়িতেই পড়ে রয়েছে । সংক্রিত হয়ে পড়ার আতঙ্কে কেউ মৃতদেহে হাত দিতে চাইছেন না । মৃতদেহ সৎকারেও কেউ যেতে চাইছেন না । বিষয়টি জানার পরেই বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় । এরপরেই পঞ্চায়েত কর্মী অমিত মণ্ডল ও পঞ্চায়েত সদস্য সেখ সাহাবুদ্দিন ওরফে দানি কোভিডে আক্রান্ত মৃত দেহ উদ্ধারে বিশেষ ভাবে তৎপরতা শুরু করেন।
জামালপুর ব্লক হাসপাতাল থেকে মহিলার ’ডেথ’ সার্টিফিকেট সংগ্রহ করা হয় । পাশাপাশি চারটি ’ পিপিই কিটের’ ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় ।পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ চার জন স্বেচ্ছাসেবককে যোগাড় করেন। তারাই পিপিপই কিট পড়ে মৃতদেহ ঘর থেকে বের করে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেয় । সৎকারের জন্যে ওই মহিলার মৃতদেহ গ্রামের শ্মশানের পরিবর্তে বর্ধমানের নির্মলঝিল শ্মশাণে পাঠানো হয়েছে “।