নিলেশ দাস, আসানসোল :-দাদার দিদিগিরি শুটের এর মাধ্যমে সমাজের রূপান্তরকামীদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিকটি তুলে ধরার চেষ্টা। বার্নপুরের ছেলে বাংলা সিরিয়ালের অভিনেতা সুমন চৌধুরী।
নারীত্বের পূর্ণতা মাতৃত্বে' কথাটি আমাদের সমাজে ব্যাপকভাবে প্রচলিত। সুমন চৌধুরী জানিয়েছেন, মাতৃত্বের এই সংজ্ঞা গর্ভধারণ এবং সন্তান জন্মদানের মাধ্যমে মা হওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ কিন্তু তা নয় গর্ভধারণ এর থেকে অনেকগুণ দামী মাতৃস্নেহে সন্তানকে মানুষ করা।
'রূপান্তরকামীরা শুধু নারী এই নয় তারাও মা' তাদের হয়তো গর্ভধারণ করার ক্ষমতা নেই , কিন্তু তাদের মধ্যে রয়েছে মাতৃত্ব। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম দেবকী মা দিলেও যশোদা মা নিজের মাতৃত্ব স্নেহে শ্রীকৃষ্ণ কে বড়ো করেন।
এছাড়াও মাদার টারেজা ( Mother Teresa ) কেও মা হয়ে উঠতে কিন্তু গর্ভধারণ করতে হয়নি। অথচ তাঁর নামের সঙ্গে কী অদ্ভুত নির্ভরতায় ‘মাদার’ বা ‘মা’ শব্দটি যোগ করা হয়! গর্ভধারণ না করেও মাতৃহৃদয়ের আলোয় উদ্ভাসিত মহীয়সী এই নারী তাঁর কোলে আশ্রয় দিয়েছেন অগণিত অসহায় শিশুকে। তিনি পুরো বিশ্বকে জানিয়েছেন, গর্ভধারণ না করেও মা হয়ে ওঠা যায় ঠিক একই ভাবে হয়তো ইশ্বর এর ইচ্ছায় তারা গর্ভে সন্তান ধারণ করতে না পারলেও রূপান্তরকামী মহিলারাও মা এর মায়া, মমতা, স্নেহ দিয়ে সন্তান কে দিয়ে বড়ো করে তুলতে পারেন। তারাও হয়ে উঠতে পারেন একজন 'মা' তাই সন্তানকে জন্ম দেওয়ার চেয়েও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ মাতৃ স্নেহে সন্তানকে মানুষ করা।
তাই দাদার দিদিগিরি শুটের এর মাধ্যমে এই আমাদের সমাজের রূপান্তরকামী মানুষদের জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ দিকটি তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন যেহেতু তারা গর্ভধারণ করতে পারেন না সেহেতু তাদের কে নিয়ে হাসেন সমাজের কিছু নিচ মানুষিকতার মানুষেরা বিদ্রুপ করেন তাদের নিয়ে। তাই বলি আপনাদের এই মানসিকতা ভেঙ্গে ফেলুন কে বলেছে শুধু গর্ভে ধারন করলেই মা হওয়া যাই? নাহলে যাইনা।
তারাও চাইলে তারা সন্তান এডপ্ট (Adopt) করে তারাও মা হতেই পারেন। কারন তাদের মধ্যে রয়েছে মাতৃত্ব। সেটার উদাহরণ আমরা দেখতেও পাই সমাজের অনেক রূপান্তরকামী মেয়েরাই আজ "মা" তারাও মাতৃ স্নেহে নিজেদের সন্তান কে বড়ো করে তুলছেন হয়ে উঠছেন সিঙ্গল মাদার ( Singel Mother ) স্তন্যপান করানোর প্রক্রিয়াটি বাদ দিলে ‘মা’ হয়ে উঠতে দু খানি হাত আর ভালোবাসায় পরিপূর্ণ একটি অন্তর ছাড়া অন্য কিছুর প্রয়োজন হয় না।
তাই এই শুটের মাধ্যমে এক সামান্য চেষ্টা করেছি সমাজের এই গুরুত্বপুর্ণ দিকটি তুলে ধরার , সত্যি কথা বলতে আজ অব্দি করা দাদার দিদিগিরির শুটের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ছিলো। কারণ এর আগে কখনই এইভাবে আউট ডোর (Outdoor Shoot ) এতো মানুষের সামনে বাজার,পার্ক, স্কুল চত্বরে কখনোই করিনি। সত্যিই নিজেকে খুব কনফিডেন্ট মনে হয়েছে যে আমি পেরেছি, আর শুধু আমি নই আমার সাথে এই ছোট্ট মেয়ে আনভি দারুন ভাবে আমায় সহযোগিতা করেছে যে আমার সন্তান এর ভূমিকায় রয়েছে। এই শুটে সকলকে ধন্যবাদ জানাবো। মেকআপ আর্টিস্ট মৌসুমী সাহা, ফটোগ্রাফার বিশ্বজিৎ ঘোষকে।