শুভময় পাত্র,বোলপুর:- বোলপুরের বিশিষ্ট চিকিৎসক সদ্য প্রয়াত ডক্টর সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হলো। এদিন শান্তিনিকেতনের উপাসনা গৃহে সদ্যপ্রয়াত 'এক টাকার ডাক্তার' সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয় ।
গত ২৬ জুলাই প্রয়াত হন পদ্মশ্রী ডাঃ সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়। গত শুক্রবার বিশ্বভারতীর তরফে স্মরণসভা করার কথা ছিল। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তা করে উঠতে পারেনি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এদিন সেই স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয় শান্তিনিকেতনের উপাসনা গৃহে। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী সুশোভনবাবুর সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, বিশ্বভারতীর আপদে বিপদে তিনি সবসময় পাশে ছিলেন, তিনি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক, আমার বড়দা। তাঁর সামাজিক কাজের জন্য ভারত সরকার তাঁকে ‘পদ্মশ্রী’ উপাধিতে ভূষিত করে।
এরপরেই উপাচার্যের বক্তব্যে উঠে আসে মেলার মাঠের পাঁচিল ভাঙার প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, '২০১৯ সালের ২১ আগস্ট বিশ্বভারতীতে তাণ্ডবনৃত্য হয়েছিল (যদিও ঘটনাটি ২০২০-র ১৭ আগস্ট ঘটেছিল)। সেই তাণ্ডবনৃত্যে বাইরের বহু সমাজবিরোধীরা ছিল। আমাদেরই পরিচিত লোকজন তারা। তাদের বক্তব্য ছিল, উপাচার্যকে ‘শিক্ষা’ দিতে হবে। প্ল্যান করলেন বিশ্বভারতীর পাঁচিল ও ফটক ভাঙা হবে। ফরমান জারি করে বিভিন্ন গ্রামের লোকজন জড়ো করা হল। সকাল ন’টায় শুরু হল তাণ্ডবনৃত্য। তিন ঘণ্টা ধরে চলে তাণ্ডবনৃত্য। যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তৎকালীন এক বিধায়ক। কিন্তু সুশোভনদা আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এই ধরনের ‘গুন্ডামি’-র তিনি প্রতিবাদ করেছিলেন।' স্মরণ সভায় বসে এই ধরনের আলোচনা করা বিশ্বভারতীর উপাচার্যের পক্ষে কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
পাশাপাশি এদিন নাম না করে কটাক্ষ করেন অনুব্রত মণ্ডলকে। অনেক পড়ুয়া, প্রাক্তনী ও আশ্রমিককে 'অরাবীন্দ্রিকও' বলেন। উপাচার্যের এই মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে সমালোচনা। শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানে বিতর্কিত মন্তব্য কেন, সে নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। আর এই আলোচনা এই ধরনের স্মরণ সভায় একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক বলে মনে করছেন শান্তিনিকেতন প্রেমী সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রী ও আশ্রমিকেরা।