সংবাদাতা,পূর্ববর্ধমান:- আলুর ক্ষতিপুরনের দাবীতে ম্যানেজার ও ক্যাশিয়ারকে ঘরে তালাবন্ধ করে বিক্ষোভ দেখালেন কৃষকরা। পূর্ব বর্ধমানের মেমারির তিরুপতি হিমঘরের ঘটনা।মেমারীর রসুলপুর এলাকার তিরুপতি হিমঘরের আলু পচে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চাষীরা। গত ১৯ মে রসুলপুর তিরুপতি হিমঘরে আলু ছাড়াতে গিয়ে চাষীরা দেখেন হিমঘরের ৩ নম্বর চেম্বার ও ২ নম্বর চেম্বারের আলু শেডে ফেলার পর দেখা যায় আলু পচে গিয়েছে। হিমঘর কর্তৃপক্ষের গাফিলতির ফলেই এক লক্ষ পনের হাজার প্যাকেট আলু নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন চাষীরা।
চাষীদের বিক্ষোভের মুখে পরে গত ৬ জুন হিমঘর কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসন ও চাষীদের সাথে বৈঠকে বসে।সেই বৈঠকে জেলা প্রসাশনের আধিকারিকদের পাশাপাশি স্থানীয় বিধায়ক ও মার্কেটিং ম্যানেজার উপস্থিত ছিলেন। সেই বৈঠকে স্থির হয় ক্ষতিপূরণ বাবদ চাষীদের ৮৯০ টাকা প্রতি প্যাকেট দেওয়া হবে। ক্ষতিপূরণের দিন ধার্য হয় ২১ জুন । কিন্তু চাষীদের অভিযোগ,নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত হিমঘর কর্তৃপক্ষ তাদের টাকা মেটানোর জন্য কোন আগ্রহ দেখাচ্ছে না। এমনকি উল্টে হিমঘর মালিক হাইকোর্ট মামলা দায়ের করেছেন। এমত অবস্থায় বিপাকে পরেছে এই হিমঘরে আলু রাখা কৃষকরা।
এই হিমঘরে ২২২ আলু রেখেছিলেন মেমারীর রাজপুর গ্রামের কৃষক সুমিত রায়। সুমিত বাবু অভিযোগ করেন, হিমঘর মালিক তাদের সাথে প্রতারণা করছে। সামনে আমন ধানের চাষ। এই চাষ করাতো দূরের কথা বাড়িতে ঔষধ কেনার পর্যন্ত টাকা নেই। হিমঘর মালিককে বলেছি আপাতত এক তৃতীয়াংশ টাকা দিতে। কিন্তু তিনি না দিয়ে হাইকোর্ট মামলা করেছেন। এরকম চলতে থাকলে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবেন বলে জানান সুমিত বাবু। আরেক কৃষক সেখ সাজ্জাদ আলম জানান, টাকা না পেলে আগামীতে সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে পড়বে। প্রশাসন আস্বাস দিচ্ছে কিন্তু আশ্বাসে তো পেট ভরবে না। হিমঘর মালিক চাষিদের সাথে প্রতারণা করেছে। প্রশাসন কি করছে? কেন তাদের বিরুদ্ধে কোনো স্টেপ নেওয়া হচ্ছে না?
হিমঘরের ম্যানেজার কাজি মেহবুব জাহেদি জানান, ইনস্যুরেন্সের টাকা এখনো পাওয়া যায়নি। মালিক হাইকোর্টে কেস করেছে। কৃষকরা টাকা চাইতে এসে আমাদের তালা বন্ধ করে রেখেছিল। পরে পুলিশ এসে তালা খুলেছে।মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলি মহম্মদ ওয়ালি উল্লাহ জানান, কৃষকদের আলুর ক্ষতিপূরণের দর ৮৯০ টাকা করে ঠিক করা আছে। গোটা বিষয়টি উচ্চ আধিকারিকদের জানানো আছে। খুব শীঘ্রই জেলাশাসক এনিয়ে আলোচনায় বসবেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার বর্ধমানে একটি অনুষ্ঠানে এসে কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, সমস্যাটি নিয়ে আমি নিজে হিমঘরের মালিককে ফোন করেছি। তিনি কায়দা করে বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন। হিমঘর মালিক সরাসরি বলছে ইনস্যুরেন্সে যা হবে তাই। তবে যেহেতু বিষয়টি এগ্রিমার্কেটিং এর, আমি তাদের বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করতে বলেছি।এদিকে আলুর ক্ষতিপূরনের টাকা না পেয়ে হিমঘর মালিকের বিরুদ্ধে মেমারি থানায় প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছেন কৃষকরা।