সংবাদাতা,পূর্ববর্ধমান: গত মার্চ মাসে ১০ প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সন্তান প্রসবকালীন মৃত্যুর হার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এ সংক্রান্ত পরিসংখ্যান হাতে আসার পরই কী কারণে মৃত্যুর হার বেড়েছে তা খতিয়ে দেখতে বৈঠক করলেন জেলা শাসক। রাজ্যের পরামর্শ মতো এ ব্যাপারে তৎপরতা বাড়িয়েছে জেলা প্রশাসন।
দক্ষিণবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। কালনা কাটোয়া মহকুমা সহ পূর্ব বর্ধমান জেলা, পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম, হুগলির একটা বড় অংশের বাসিন্দারা এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল। রোগী আসে বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকেও। এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অন্যান্য বিভাগের পাশাপাশি প্রসূতি বিভাগের ওপর চাপও অনেক বেশি। তাই এই হাসপাতালে প্রসবকালীন মৃত্যুর হার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ায় উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতর।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় সূচক অনুযায়ী মাসে তিন থেকে চারজনের প্রসবকালীন মৃত্যু স্বাভাবিক। সেখানে ২০২০-২১ সালে এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রসবকালীন মৃত্যু হয়েছে ৫৩ জনের। এবং ২০২১-২২ সালে মৃত্যু হয়েছে ৬৩ জনের।যা সূচকের ওপরে। উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে গত তিন মাসের পরিসংখ্যান। তাতে দেখা যাচ্ছে, গত তিন মাসে প্রসবকালীন মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। তার মধ্যে শুধু মার্চ মাসেই মৃত্যু হয়েছে ১০ জন প্রসূতির।
ঠিক কী কারণে মৃত্যুর হার এতটা বেড়েছে তা খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার বর্ধমান মেডিকেলে বৈঠক করেন জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা। বৈঠকে ছিলেন বর্ধমান মেডিকেলের অধ্যক্ষ প্রবীর সেনগুপ্ত, বর্ধমান মেডিকেলের সুপার তাপস ঘোষ, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব কুমার রায় সহ সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা। বৈঠকের পর বর্ধমান মেডিকেলের প্রসূতি বিভাগের পরিকাঠামো পরিদর্শন করেন জেলাশাসক।
বৈঠকে উঠে এসেছে,মৃতদের মধ্যে অনেকেই বর্ধমান মেডিকেলে এসেছিলেন অবস্থার যথেষ্ট অবনতি হওয়ার পর। চেষ্টা করেও তাঁদের বাঁচিয়ে তোলা সম্ভব হয়নি। বেশ কয়েকজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে দূরত্বের কারণে। অবস্থায় অবনতির পাশাপাশি দীর্ঘ পথ পার হয়ে এই হাসপাতালে আসার ধকল সহ্য করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনি। বর্ধমান মেডিকেলে রেফার করা হয় এমন হাসপাতালগুলির প্রসূতি বিভাগের পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রয়োজন কিনা তাও খতিয়ে দেখার বিষয়টি আলোচিত হয়।
বর্ধমান মেডিকেলের প্রসূতি বিভাগের পরিকাঠামো ও পরিষেবা আরও উন্নত করার দিকটিও আলোচনায় উঠে আসে।পাশাপাশি আরোও একটা মৃত্যুর কারণ উঠে এসেছে টিনেজ প্রেগনান্সি।যদিও প্রসূতি মৃত্যুর হার কমানোর জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সেগুলি হলো অ্যান্টি নেটাল কেয়ারকে আরোও শক্তিশালী করা হচ্ছে।আশা কর্মীরা বাড়িতে গিয়ে হেলথ প্যারামিটার ট্রাক করবে,প্রসূতির যেগুলো রেগুলার মেডিসিন দেবার সেটা দেবে।রেগুলার বেসিসে ভিজিট করা হবে।এমনকি হাসপাতাল গুলোকে রেফারাল হাসপাতালে রেফার করার সময় মেন্টারকে জানাতে হবে কেন রেফার করা হচ্ছে।