সোমনাথ মুখার্জি অন্ডাল :- সালটা ছিল ১৪ ই জুলাই ২০২০। ইসিএলের (ECL)খোলামুখ খনির বিস্ফোরণের জেরে অন্ডালের (ANDAL)হরিশপুর গ্রামে ব্যাপকভাবে ধস দেখা যায় বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ । সেই মুহূর্তে গ্রামবাসীরা ইসিএলের (ECL)বিভিন্ন দফতরে বিক্ষোভ ও লিখিত অভিযোগ জানাই । এর কিছুদিন পরেই ফের প্রবল ধসে আক্রান্ত হয় পুরো গ্রাম । ভেঙে পড়েন বহু বড় বড় কংক্রিটের বিল্ডিং ।সেই মুহূর্তে আতঙ্কে গ্রাম ছাড়তে শুরু করেন গ্রামের মানুষের একাংশ ।
ধরনা দেওয়া হয় ইসিএলের (ECL) বিভিন্ন দপ্তরে । ধসের কারণে গ্রামবাসীরা দু নম্বর জাতীয় সড়কে অবরোধে বসেন । ধস নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা । শাসকদল বিরোধী দল সকলেই ধসকবলিত গ্রামবাসীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন এমনটাই গ্রামবাসীদের তরফে জানা যায়। কিন্তু কেউই কথা রাখেননি তাই গত বিধানসভা ভোটেও এই গ্রামের মানুষেরা ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন । গত বিধানসভা ভোটে এই গ্রাম থেকে পড়েনি একটা ভোটও এমনটাই গ্রামবাসীরা জানান ।
গ্রামের এক প্রবীণ নাগরিক বলরাম ঘোষ জানান,ধসকবলিত গোটা গ্রাম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা,শাসকদল বিরোধী দল সকল দলের নেতারাই তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন কিন্তু কথা রাখেননি কেউই । তাই যখন তাদের পাশে কেউ নেই কেন তাঁরা ভোট দেবেন কোনো রাজনৈতিক দলকে ।
গ্রামের এক মহিলা বাসিন্দা শোভা চৌধুরী জানান,আমরাও ভারতবাসী ভোট দেওয়ার অধিকার আমাদেরও আছে কিন্তু যখন ধস ফের আতঙ্কে আমরা আতঙ্কিত সেই মুহূর্তে আমাদের পাশে নেই কেউ। তাই কোনো রাজনৈতিক দলকেই আর ভোট নয় । সেজন্যই এবারের উপনির্বাচনে ভোট বয়কটের ডাক গোটা গ্রামের । গ্রামবাসীদের দাবি তাঁদের গ্রাম ধসের কবলে প্রায়ই সমস্তটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে তাই গ্রামের বদলে গ্রাম চাই, বিদ্যালয়ের বদলে বিদ্যালয়,বাসস্থানের বদলে নিরাপদ বাসস্থান চাই ।
বিধায়ক তাপস ব্যানার্জি বলেন কেন্দ্রীয় সরকার কে বার বার বলা সত্ত্বেও হরিশপুর কে কিছু কিছু জায়গায় মাস্টার প্ল্যান এ অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে না। এটা ওদের প্রতি অন্যায় হচ্ছে ,আমরা ওদের প্রতি সমব্যাথী। আমিও কথা বলেছিলাম,রাজ্য সরকার ও প্রস্তাব করেছিলেন যাতে হারিশপুরকে মাস্টার প্ল্যান এ অন্তর্ভুক্ত করা হয় কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের কোল দফতর এখনো পর্যন্ত হরিশপুরকে মাস্টার প্ল্যান এ অন্তর্ভুক্ত করছে না । আমার বিধান সভা এলাকার মধ্যে পরে এলাকাটি ,আমি নিজে গিয়ে বোঝাবে। আমরা গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলবো তাদের বোঝাব ভোট বয়কট না করে কেন্দ্রীয় সরকারের বিমাতৃ সুলভ আচরণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।ভোট বয়কট করে ওদের সুবিধা করে দেওয়া চলবে না। আমার বিশ্বাস গ্রামবাসীরা গ্রামবাসীরা বুঝে সঠিক পদক্ষেপ নেবেন।
যদিও সূত্র মারফত জানা যায় ফরিদপুর গ্রামের বাসিন্দাদের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হয়েছে । গ্রামবাসীরা সেই জায়গায় যেতে রাজি নয় ।অন্যদিকে গ্রামবাসীদের দাবি যে শত শত ঘরে গুলিতে তাদের বাস করার কথা বলা হচ্ছে গ্রামের মানুষ হিসেবে সেগুলি বাসযোগ্য নয় ।কারণ গ্রামে যৌথ পরিবারে অনেক মানুষের বাস,তাই ওই ছোট ছোট ঘরে বাস করা সম্ভব নয়।
গ্রামবাসীদের আরও দাবি গ্রামে যেমন যেমন মানুষের বাড়িঘর রয়েছে এত বড় বড় বাড়ির বদলে যদি ছোট ছোট দুটি রুমের বাসস্থান দেওয়া হয় তাহলে তারা সেগুলোতে যাবে কেন ?সামনেই আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচন ঠিক তার আগেই অন্ডাল গ্রামের হরিশপুরে ভোট বয়কটের ডাক। এই ঘটনায় ফের রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা ।