বকুল কর ।বাড়ি কাঁকসার গোপালপুরে । সাত বছর ধরে তিনি ছাঁচের প্রতিমা বিক্রি করেন । বেশি বিক্রি হয় লক্ষী , সরস্বতী, কার্তিক আর পয়লা বৈশাখের আগে গনেশ লক্ষীর প্রতিমা । বকুল দেবীর ভরা সংসার । নাতি নাতনি ছেলেমেয়ে নিয়ে ঘর । সঙ্গে রয়েছে স্বামী বৈদ্যনাথ করের প্রতিমা গড়ে বিক্রি করার ব্যবসা এবং কাঠের আসবাবপত্র তৈরির দোকান ।
স্বামীর সাথে প্রতিমা গড়ার কাজেও সাহায্য করেন বকুল দেবী । বাবার বাড়িতেই তিনি শিখেছিলেন প্রতিমা গড়ার কাজ । এখন সেই শেখা সংসারের হাল ধরতে সাহায্য করছে । বছর সাত ধরে তিনি বিশেষ কয়দিন ছাঁচের প্রতিমা বিক্রি করেন । ভাবনাটা বকুল দেবীর মাথাতেই এসেছিল । শুরু করেছিলেন সামান্য কয়েকটি ছাঁচের প্রতিমা বিক্রি করেই । আর আজ বকুল দেবীর ব্যবসা বেশ বেড়েছে । সংসার চালিয়ে যেটুকু অর্থ বাঁচে তা রেখে দেন তিনি সযত্নে ।
আর সেই বাঁচানো টাকায় ছাঁচের প্রতিমা কিনে এনে বিক্রি করেন তিনি । এবার সরস্বতী প্রতিমা এনেছেন ৩০০টি । গত বছর এনেছিলেন ১৫০ টি । দুদিন আগে থেকেই তিনি এনেছেন এসব ছাঁচের প্রতিমা । বিক্রিও শুরু হয়ে গিয়েছে । বেশ ভালোই বিক্রি হচ্ছে । আসলে বাগদেবীর আরাধনা ঘরে ঘরে হয় । সন্তানদের বায়না মেটাতে এ প্রজন্মের অভিভাবকেরা পিছিয়ে নেই ।
দাম কেমন? ১০০ টাকা থেকে আটশো টাকা পর্যন্ত দামের ছাঁচের প্রতিমা রয়েছে বকুল দেবীর দোকানে । দোকান ? ঘরের বাইরের দাওয়াতেই তিনি একয়দিন বিক্রি করেন । বুকুল দেবীর আনা বাগদেবীর প্রতিমা একটিও অবিক্রীত থাকে না । লাভ ? মুচকি হেসে বুকুল দেবী তা এড়িয়ে যান । আসলে সাত বছরের অভিজ্ঞতায় বকুল দেবী বুঝে গিয়েছেন লাভের কথা প্রকাশ্যে বলতে নেই ।
সকাল দশটার মধ্যে রান্নাবান্না সেরে ফেলছেন বকুল দেবী । এরপরে তিনি বসে যান প্রতিমা বিক্রীতে । দুপুরের খাবার খেয়ে চটপট আবার বসে পড়েন প্রতিমা বিক্রিতে । বকুল কর এখন গ্রামাঞ্চলের মেয়েদের কাছে এক উদাহরণ হয়েছেন। সংসার চালিয়ে বেঁচে যাওয়া টাকা রেখে দিয়ে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে সেই টাকা দিয়ে ব্যবসা করলে ঘরের লক্ষীর ভাণ্ডার কখনো ফাঁকা থাকে না তাই দেখিয়েছেন বকুল।