Type Here to Get Search Results !

পুলকার চালকের কাজ হারিয়ে ,বর্তমানে চা বিক্রি করে কোনো রকমে সংসার চলেছেন অন্ডালের আনন্দ দুবে



সোমনাথ মুখার্জি, অন্ডাল :- ২০২০ সালে কোরোনা আবহে সারা পৃথিবী জুড়ে প্রচুর মানুষ হারিয়েছেন তাঁদের কাজ।কাজ হারিয়ে বহু মানুষকে চরম আর্থিক সংকটে পড়তে হয়েছে নিজের কাজ হারিয়ে কেউ করছেন ফুটপাথে দোকানদারী কেউবা আবার ঘুরে ঘুরে সবজি বিক্রি করছেন এমন চিত্র পশ্চিমবঙ্গে আকছার দেখা যাচ্ছে । 


এমনিই চিত্র ধরা পড়ল অন্ডালের সিদুলি এলাকায়। বহু কষ্ট করে নিজেই কিনেছিলেন একটা ছোট্ট চার চাকা গাড়ি এবং তা দিয়েই পুলকারের কাজ করতেন তিনি।এভাবে স্বাচ্ছন্দে চলত সংসার আনন্দ কুমার দুবের । কিন্তু তাঁর তাঁর ভাগ্যে অন্ধকারের ছায়া নেমে আসে করোনার রূপ ধরে। করোনার কারণে দেশ তথা পৃথিবী জুড়ে শুরু হয় লক ডাউন। 


লকডাউন ধীরে ধীরে দীর্ঘ হতে থাকে দুই বছর ধরে চলে আসছে লক ডাউন ।বন্ধ হয়েছিল স্কুল, কলেজ, অফিস, কাছারি সমস্ত কিছু ।কিন্তু বর্তমানে করোনার সংক্রমণ সীমিত হওয়ায় খুলেছে অফিস, কলেজ, স্কুল, বাজার ঘাট। স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয় তার পুলকারের থেকে আয়। ফলে সংসারে নেমে আসে চরম আর্থিক সঙ্কট। 


অন্ডালের সিদুলি এলাকার বাসিন্দা আনন্দ কুমার দুবে জানান , পুলকারের কাজ  বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেই মুহূর্তে কী করবেন তিনি বুঝতে পারছিলেন না কিন্তু চারজনের সংসারের তিনিই একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তি ।যেমন করেই হোক ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা ও তাদের মুখে দু মুঠো অন্ন তুলে দেওয়ার একান্ত প্রচেষ্টায় তাকে আজ চা বিক্রেতায় পরিণত করেছে। 


আনন্দবাবু জানান তখন তিনি ঠিক করেন তার পুলকারটিকে কিছু পরিবর্তন করে সেখানেই চায়ের দোকান লাগানোর ।খরচ করে পুলকারের  কিছু পরিবর্তন করে সেখানেই চলমান চায়ের দোকানের পরিণত করলেন। সকাল হলেই তিনি চলমান চায়ের দোকান নিয়ে নিয়মিত হাজির হয়ে যান সিদুলি কোলিয়ারির অফিসের সামনে। 


তিনি জানান এভাবে চলমান  চায়ের দোকান করে তিনি দিনে দুই থেকে তিনশো টাকা রোজগার করেন । তাতে বর্তমানে সংসার চালানো খুবই কঠিন বলে জানান তিনি । আনন্দবাবু জানান বর্তমানে স্কুল খুলেছে কিন্তু কোনো স্কুল থেকে  তার ডাক আসেনি পুলকার চালানোর জন্য ।আর ডাক এলেই বা কী ? পুলকার বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর গাড়িতে যে সমস্ত পরিবর্তন করেছিলেন তাতে তাঁর সঞ্চিত অনেক অর্থই খরচ হয়েছিল। 


দীর্ঘ এই লকডাউনে চরম আর্থিক সমস্যায় দেওয়া  হয়নি গাড়ির ইনস্যুরেন্স, ট্যাক্স। তাই পুলকারের ডাক পেলেও আবার এত টাকা জোগাড় করে তার গাড়িটিকে পুলকারে রূপান্তরিত করা তাঁর পক্ষে সম্ভব হবে না বলে জানান। তাঁর সংসারে তাঁর স্ত্রী ছাড়া রয়েছে দুই সন্তান ও এক কন্যা সকলেই স্কুলপড়ুয়া। সংসার চালাতে তাই নিয়মিতই সিদুলি এলাকার বেশ কয়েকটি জায়গায় সময়মতো গাড়ি নিয়ে পৌঁছে যান  চা ওয়ালা আনন্দ দুবে।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad