নিজস্ব প্রতিনিধি,পূর্ব বর্ধমান:- অকাল বর্ষণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে শস্যগোলা পূর্ব বর্ধমানের চাষীরা।ধান,আলুর পাশাপাশি সবজী চাষেও ক্ষতি হয়েছে নিম্নচাষের বৃষ্টিতে।আমন ধান কাটার ভরা মরশুমে দু-দুবার বৃষ্টি। অন্যদিকে জমি থেকে ধান তোলার পর সবে আলু বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু বৃষ্টিতে মাথায় হাত চাষীদের। এমনিতেই সপ্তাহ দুয়েক আগে বৃষ্টিতে আলু বসানোর কাজ পিছিয়ে যায়।জমি তৈরি করে সবেমাত্র জেলাজুড়ে জোরকদমে শুরু হয়েছে আলু বসানোর কাজ। আর তারই মধ্যে ফের নিম্নচাপের বৃষ্টিতে সব যেন ওলোট পালোট করে দিল।
জেলার জামালপুর, রায়না,ভাতার,আউশগ্রাম, গলসি,মেমারি সহ সর্বত্রই কমবেশী এক চিত্র। আলুর জমিতে জল দাঁড়িয়ে আছে। ফলে আলুর বীজ নষ্ট হয়ে যাবে বলে মনে করছেন চাষীরা।জামালপুরের বাসিন্দা সীতারাম দে জানান, এক বিঘে জমি আলু চাষ করতে এবছর গড়ে খরচ হয়েছে ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা। এখন সব জলে গেল।তিনি বিঘে দশেক জমিতে আলু বসিয়েছেন।কিন্তু আলুর জমি জলের তলায়।কি হবে জানি না।
এমনিতেই এতদিনে বাজারে পোখরাজ প্রজাতির নতুন আলু বাজারে চলে আসে।কিন্তু এবার সেই আলুও বসানো পিছিয়ে গেছে খামখেয়ালি আবহাওয়ার জন্য।চাষী দেবগোপাল দাস বলেন,এখন যা পরিস্থিতি নতুন করে আলু বসাতে হবে।কিন্তু জমির জল শুকিয়ে তা ঠিক হতে একমাস লেগে যাবে।তখন আলু বসানোর মরশুম চলে যাবে।সুতরাং চাষীরা সব দিকেই মরছে।ধার দেনা করে আলু বসানো হয়েছে। অনেকে ঘরের সোনাদানা বন্ধক রেখেও চাষ করেছেন। কিন্তু এখন সব নষ্ট হয়ে গেল বলে জানান তিনি।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া বলেন, জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে।সব থেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছে রায়না ১ নম্বর ব্লকে। সেখানে ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।তিনি বলেন, ধানের পাশাপাশি আলু ও সবজী চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সভাধিপতি বলেন,জেলায় মিটিং হবে চাষীদের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে। যাদের কৃষি বীমা করা আছে।তারা বীমার টাকা পেয়ে যাবেন।
পাশাপাশি তিনি বলেন, সব কৃষককে বীমার আওতায় আনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী চেষ্টা করছেন।সোমবার তিনি জেলার রায়না,জামালপুর সহ বেশ কয়েকটি ব্লকের জমি পরিদর্শন করেন।তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল ও জেলা কৃষি দপ্তরের সহ আধিকারিক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়।
আরো পড়ুন:- শান্তিনিকেতন দূরদর্শন কেন্দ্রকে বাঁচিয়ে রাখার আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি সাংসদের
জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন এবছর জেলায় ৭২ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা আছে।এরমধ্যে অর্ধেক জমিতে ইতিমধ্যেই আলু বসানোর কাজ হয়েছে। জমিতে জল দাঁড়িয়ে আছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ এখুনি বলা সম্ভব নয়।