নিজস্ব প্রতিনিধি:- ব্যবসায়ী সব্যসাচী মন্ডলের খুনের (Sabyasachi Mandal Murder Case) তদন্তে অগ্রগতি। আজ রায়না (Rayna) থানার পুলিশ মূল অভিযুক্ত জানিসার মন্ডল ওরফে রিকিকে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে। সেখানে গোটা ঘটনার কথা স্বীকার করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে ' সুপারি কিলার ' রিকি।কীভাবে দেরিয়াপুরে (Deriyapur) গ্রামের বাড়িতে আসা সব্যসাচীকে পরিকল্পনা মাফিক খুন করা হয় তার বিবরণ দেয় রিকি। তাকে দিয়ে গোটা ঘটনার পুননির্মাণ (Reconstructed) করায় পুলিশ।
এদিন মূল অভিযুক্ত জানিসার আলম ওরফে রিকিকে পুলিশ নিয়ে আসে সব্যসাচী মন্ডলের (Sabyasachi Mandal) দেরিয়াপুরের বাড়িতে। এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে পুলিশ দুজনকে আটক করেছে। তবে ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযুক্ত নিহতের কাকার ছেলেদের এখনো ধরা যায়নি। এছাড়াও ঘটনার দিনের কালাড়াঘাট ব্রিজের (Kalaraghat Bridge) সি সি টিভি ফুটেজ আসে পুলিশের হাতে। যা এই তদন্তে চাঞ্চল্যকর মোড় নিয়ে আসে।
এদিন দেরিয়াপুরে সব্যসাচী মণ্ডলের পৈতৃক বাড়িতে এসে প্রথমেই কান্নায় ভেঙে পড়ে রিকি। সে এদিন ঘটনা কীভাবে ঘটে তা ও তার বিবরণ তুলে ধরে। সে জানায়, প্রথমেই তারা ঠাকুরদালানের কাছে এসে চাকু দেখিয়ে ড্রাইভারকে ভয় দেখায়।
তার মোবাইল কেড়ে নেয়।তার সব্যসাচীর ড্রাইভার আনন্দ সাউকে বাধ্য করে সব্যসাচীকে ডেকে আনতে।সব্যসাচী দোতলা থেকে নামার আগেই দুস্কৃতীরা পজিশন নিয়ে তৈরি থাকে। এরপর সব্যসাচী ঘটনাস্থলে নেমে এলেই কোনো কিছু ভাবার আগেই তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় রিকি৷
সেই গুলি লেগেছে কী না তা রিকি বলতে পারেনি। এসময় সব্যসাচী পালাতে যান। পালতে গিয়ে সিড়ির মুখে পড়ে যান সব্যসাচী। রিকি জানায়, সেসময় সে আর এক রাউন্ড গুলি চালায় । এতেও না থেমে সে ও তার দলবল সব্যসাচীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বারবার কোপাতে থাকে।
রক্তাক্ত অবস্থায় সেখানেই পড়ে যান সব্যসাচী। তাকে ওই অবস্থায় ফেলেই চম্পট দেয় সুপারি কিলার রিকি ও তার সঙ্গীরা।এদিন গুলি চালানো ও কোপানোর কথা স্বীকার করে রিকি। তাকে এদিন ভেঙে পড়তে দেখা যায়।এদিন পুলিশবাহিনির নেতৃত্বে ছিলেন রায়না থানার ওসি পুলক মন্ডল।
এদিন আরো কিছু কথা স্বীকার করেছে রিকি। তারমধ্যে সুপারি কিলিংয়ের জন্য তাকে পঞ্চাশ লক্ষ টাকায় বুক করেছিল সব্যসাচীর ছোটকাকার ছেলে সোমনাথ মন্ডল।তার মধ্যে কুড়ি লক্ষ টাকা অগ্রিম পেয়েছিল রিকি। বাকিটা পরে দেবার কথা ছিল।
আরো পড়ুন:- মাইথনের ছট ঘাট পরিদর্শন করলেন পুলিশ প্রশাসন ও ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক
তার কথা অনুসারে, সেদিন বাড়ি দেখিয়ে দিয়ে বেরিয়ে যায় সোমনাথ। অপারেশনে তখনো দেরি থাকায় তারা পাশের গ্রাম বালাগড়ে যায়। সেখানে চা খায় দোকানে।তদন্তকারীদের অনুমান, সেখানেই এই নৃশংস হত্যাকান্ডের ব্লু-প্রিন্ট ছকে নেয় রিকি ও অন্যরা।
হত্যাকান্ডের পরপরই নিহত সব্যসাচীর বাবা অভিযোগ করেছিলেনে, সুপারি কিলার লাগিয়ে তার ভাইপোরাই এই কান্ড ঘটিয়েছে। ঘটনার গতিপ্রকৃতি সে দিকেই নির্দেশ করছে।