তনুশ্রী চৌধুরী,পানাগড়:- কাঁকসা গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে দক্ষিণ কেনেল পাড়ে একটি জলাশয়ে ছট পুজোর আয়োজন করা হয়।বুধবার বিকালে ছট পুজোর অনুষ্ঠানে যোগ দেন পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি সমীর বিশ্বাস, কাঁকসা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শুক্লা সিং, তৃণমূলের হিন্দি প্রকোষ্ঠ সংগঠনের সদস্য বীরেন্দ্র শ্রীবাস্তব সহ এলাকার বিশিষ্ট জনেরা।
সমীর বিশ্বাস জানিয়েছেন গ্রাম পঞ্চায়েত এর পক্ষ থেকে করোনা সংক্রমণ যাতে না ছড়ায় সেই কারণে দক্ষিণ কেনেল পাড়ে এলাকার মানুষের জন্য ছট পুজোর আয়োজন করেছে। এর ফলে এতদিন যেখানে একটি জায়গায় মাত্র ছট পুজোর আয়োজন হতো সেখানে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হলে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। যার কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বছর নানান জায়গায় ছট পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল।
গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে তিনি আবেদন করেছেন যাতে আগামী বছর ছট পুজোর জন্য জলাশয় একটি সংস্কার করে জলাশয় এর চারধারে পাকা ঘাট এর ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য।
ছট পুজো উপলক্ষে এদিন ১০০ জন দুঃস্থ অসহায় মহিলাকে নতুন বস্ত্র প্রদান করা হয়। পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি সমীর বিশ্বাস ও কাঁকসা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শুক্লা সিং দুস্থ অসহায় মানুষদের হাতে নতুন বস্ত্র তুলে দেন।
প্রশাসনের নিয়ম মেনে এবছর সাড়ম্বরে পালিত হল ছট পূজার অনুষ্ঠান। পানাগর স্টেশন সংলগ্ন একটি জলাশয়ে দুদিন ধরে পুজোর আয়োজন করা হয়। অন্যান্য বছর যে পরিমাণে পুজো দেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষের ভিড় জমে। কাঁকসার বিভিন্ন প্রান্তে জলাশয়ে ছট পুজোর আয়োজন করার জন্য পানাগর স্টেশন সংলগ্ন জলাশয়ে এবছর ভিড় অনেকটাই কম থাকে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে সমস্ত সাধারণ মানুষ মাস্ক ছাড়া ঘাটে প্রবেশ করেন তাদের সকলের মুখে মাস্ক পরিয়ে দেওয়া হয়।
পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ সাধারণ মানুষের কোন সমস্যা হলে তার জন্য আগে থেকেই সিভিল ডিফেন্সের একটি দল স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ছট পুজোর ঘাটে ক্যাম্প করা হয়।
কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য সমগ্র ঘাটের চারপাশে পুলিশের কড়া নজরদারি রাখা হয়। ছড়াও রেলপুলিশের আধিকারিকরা, থানার পুলিশ এবং পুজো কমিটির সদস্যরা সমগ্র ঘাটে নজরদারি রাখে।
ঘাটে আসা ভক্তরা বলেন গত চারদিন ধরে তাদের এই পুজো চলছে। আজ বিকেলে সূর্যদেবের পুজো করার পর আগামীকাল সূর্য উদয়ের সময় সূর্য দেবের দেওয়ার পর তাদের পুজো শেষ হবে। প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় খুশি এলাকার মানুষ।
বুদবুদ হিন্দি ভাষি জনকল্যাণ সমিতির ছট পুজো শুভ উদযাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গলসী বিধানসভা বিধায়ক নেপাল ঘরুই ।সমাজসেবী ও পূর্ব বর্ধমান জেলার তৃণমুল কংগ্রেস সহ সভাপতি মোঃ জাকির হোসেন। গলসী ১নং ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি অনুপ চ্যাটার্জী। শিক্ষক সুন্দর পাসয়ান, গলসী ১নং ব্লক যুব সভাপতি পারর্থ সারথী মন্ডল।
এদিন পানাগড়ে ছট পুজোর ঘাটে প্রস্তুতি ও নিরাপত্তার বিষয় খতিয়ে দেখেন কাঁকসা থানার ভার প্রাপ্ত IC অর্ণব গুহ,পানাগড় বাজার ছট পুজো কমিটির সদস্যরা ও এলকার বিশিষ্টজনেরা।
পুজো কমিটির কোষাধক্ষ জানিয়েছেন প্রায় ৪০বছর ধরে পানাগড় স্টেশন সংলগ্ন জলাশয়ে ছট পুজোর আয়োজন করা হয়। তবে এবছর করোনার জন্য নানান বিধি নিষেধ লাগু করা হয়েছে। যারা জলাশয়ে আসবে তাদের মাস্ক ছাড়া জলাশয়ে প্রবেশ করানো হবে না বলে জানিয়েছেন পুজো কমিটির সদস্যরা।পুলিশের পাশাপাশি পুজো কমিটির সদস্যরাও জলাশয়ে নজরদারি চালাবে বলে জানিয়েছেন কমিটির সদস্যরা।
দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফুলঝোর এলাকার সংকর বাঁধে ছট পুজো দেওয়ার জন্য ভিড় জমালেন এলাকার বাসিন্দারা।বুধবার বিকাল থেকে পূজোর সামগ্রী নিয়ে জলাশয়ের ধারে ভিড় জমান মানুষ।এদিন করোনার বিধি-নিষেধ মেনে পুজোর আয়োজন করা হয়।
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন করোনার বিধি-নিষেধ মেনে তারা এ বছর পুজোর আয়োজন করেছে। গত চারদিন ধরে তাদের এই ছট পুজোর অনুষ্ঠান চলছে।আজ জলাশয়ের ঘাটে সাধারণ মানুষ পুজো দেওয়ার জন্য আসেন এবং সেখানে সূর্যাস্তের সময় সূর্যের পুজো দেওয়ার পর আগামীকাল এর সকলেই জলাশয়ে এসে সূর্য উদয়ের সময় সূর্যের পুজো দেওয়ার পর তাদের এই পুজো সম্পন্ন হবে।
ছট পুজো এমনই একটি পুজোর যে পুজোর সময় সূর্যাস্তের মুহূর্তে সূর্যদেবের পুজো দেওয়া হয়।অন্যান্য বছর ছট পুজো দেওয়ার জন্য ছট পুজোর ঘাটে প্রচুর পরিমাণে ভিড় হলেও এবছর করোনার জন্য ভিড়ের সংখ্যা অনেক কম ছিল।