শুভময় পাত্র,বীরভূম:- বীরভূমের শান্তিনিকেতনে পৌষমেলা করার দাবিতে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতীকে চিঠি দিল বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি ও পৌষমেলা বাঁচাও কমিটি। এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে একথা জানান তারা৷ প্রসঙ্গত, গত বছর কোভিড পরিস্থিতির জন্য বন্ধ ছিল ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা। এবার পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক, তাই মেলা করার দাবি জানানো হয়৷ তবে পৌষমেলা না করলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাবে পৌষমেলা বাঁচাও কমিটি বলে জানান তারা।
প্রতি বছর ২৩ ডিসেম্বর শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লীর মাঠে শুরু হয় পৌষমেলা। ৪ দিন চলে এই মেলা৷ ২০২০ সালে কোরোনার প্রকোপে বন্ধ রাখতে হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা৷ এবার যাতে পৌষমেলা হয় তারজন্য শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের চেয়ারপার্সন সুবজকলি সেনকে ও বিশ্বভারতীকে চিঠি দেন বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি পৌষমেলা বাঁচাও কমিটি।
তাদের দাবি, বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে৷ তাই পুনরায় পৌষমেলা করা হোক৷ পৌষমেলা হল সংস্কৃতির মেলবন্ধন৷ এছাড়া, ব্যবসায়ীদের সারা বছরের রোজগারের একটা পথ এই মেলা৷ তাই পৌষমেলা যদি এবারও না হয়, তাহলে বোলপুর-শান্তিনিকেতন এলাকায় অর্থনীতিতে একটা ধ্বস নামবে এমনটা বলাই যায়৷ যদি, এবার পৌষমেলা না করা হয় তাহলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাবার হুঁশিয়ারি দেয় শান্তিনিকেতন পৌষমেলা বাঁচাও কমিটি।
প্রসঙ্গত, ১৮৪৩ সালে ২১ ডিসেম্বর (৭ পৌষ) মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশের কাছে ব্রাহ্ম ধর্মে দীক্ষিত হন । এরপর এই ধর্মের প্রসার ও প্রচার বৃদ্ধি পায় । এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ও প্রচারের স্বার্থে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৪৫ সালে কলকাতার গীরিটির বাগানে উপাসনা, ব্রাহ্ম মন্ত্র পাঠের আয়োজন করেন । এটিকেই পৌষমেলার সূচনা বলে ধরা হয় ।
আরো পড়ুন:- যেন পাকা ধানে মই ! টানা তিনদিনের নাগাড়ে বৃষ্টিতে শস্যগোলা পূর্ব বর্ধমানের কৃষকদের মাথায় হাত
পরবর্তীকালে ১৮৬২ সালে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে আশ্রম প্রতিষ্ঠার কথা ভাবতে শুরু করেন। ১৮৯১ সালে ব্রহ্মমন্দির বা উপাসনা গৃহ প্রতিষ্ঠিত হয় । এটিকে শান্তিনিকেতনের পৌষ উৎসবের সূচনা হিসেবে ধরা হয় । ১৮৯৪ সালে এই পৌষ উৎসবের পাশাপাশি মন্দির সংলগ্ন মাঠে শুরু হয় পৌষ মেলা । দিন দিন মেলার পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে পূর্বপল্লির মাঠে এই মেলা হয়ে আসছিল।