Type Here to Get Search Results !

বাঁধের উপর বৃদ্ধ, শিশুদের নিয়ে বিষধর সাপের সাথে সহাবস্থান তাদের, সমস্যা টিকে থাকার,তাগিদ ঘুরে দাঁড়াবার


নিজস্ব প্রতিনিধি:-বাঁধের উপর বৃদ্ধ, শিশুদের নিয়ে বিষধর সাপের সাথে সহাবস্থান তাদের। এমনকি সাপ আস্তানায় ঢুকে পড়লে পিটিয়ে না মেরে বাঁচার উপায় নেই। পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের ভেদিয়া অঞ্চলে অজয় নদের বাঁধ ভেঙে যায় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে।গ্রামবাসীদের অদম্য চেষ্টা প্রকৃতির রোষের কাছে হার মেনেছে।সাতলা, ধুকুর বাগবাটি, বঙ্গপল্লী সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম জলের তলায়। নদীতে জল ছাড়া কমায় জলস্তর নামছে।কিন্তু সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের এই শুরু।গতকাল আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্ডার দাবি করেছিলেন কিছু মানুষ বাঁধে থেকে গেছেন ইচ্ছে করে।প্রশাসনের তরফথেকে দাবি করা হয়েছিল সব রকম ত্রাণ পৌঁছে যাবে।কিন্তু অসহায় বানভাসি মানুষের গলায় ভিন্ন সুর। একটু তাদের কথাও শোনা যাক।

ধুকুর গ্রামের সোমা সরকার কান্নায় ভেঙে পড়ে জানালেন মেয়েদের নিয়ে ভয়ে ভয়ে বাঁধের উপর বাস করতে হচ্ছে।তার তিনটে ঘর ছিল।সব তলিয়ে গেছে। ঘরের কিছু ই বাঁচাতে পারা যায়নি।সামান্য চিঁড়ে মুড়ি ছাড়া আর কিছু জোটেনি বলেই দাবি তার।

অন্যদিকে সাতলা বঙ্গপল্লীর ধীরেন্দ্রনাথ জোয়ারদার বলছেন ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা। যারা বাঁধে নেই তারাও ভাল নেই।  ঘরে সাপ ঢুকে পড়ছে। বেশিরভাগ বিষধর।তার প্রচন্ত আতঙ্কিত।তাদের বাড়ি থেকে ক্ষেতের ফসল কিছুই বেঁচে নেই। কিছু ত্রিপল,চিড়ে গুড় পেয়েছেন মাত্র। আরো ত্রাণ প্রয়োজন। যাদের বাড়ি ভেঙে গেছে তাদের কী হবে? গ্রামবাসীদের দাবি, প্রায় দু হাজার বিঘে জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।এই এলাকায় সবজি চাষ বেশি হয়৷ কপি, পটল , ঝিঙে, উচ্ছে থেকে ধান সব জলের তলায়।কীভাবে এই ক্ষতি সামলাবেন ভাবতেই ভয় পাচ্ছেন তারা।

এলাকার বাসিন্দা নৃপেন জোয়ারদার বলছেন বাঁধের উপর বয়স্ক মানুষদের নিয়ে কোনোরকমে থাকতে হচ্ছে।দুর্দশার অন্ত নেউ।তার দাবি বাঁধ বাঁচাতে তারা সময় থাকতে কিছু বস্তা ও অন্য সামগ্রী চেয়েছিলেন। সেটা সময় থাকতে পাননি।শেষে ঘর বাঁচাবেন না বাঁধ বাঁচাবেন ভেবে উঠেও কিছু করতে পারেন নি।

সেচ দপ্তরের আধিকারিক শনিবার এলাকা পরিদর্শনে যান। তার কথায়, ৭০ মিটার মত বাঁধের ক্ষতি হয়েছে। তার দাবি, প্রথমে একটা রাস্তা বানানো হবে। পরে স্থায়ীভাবেই বাঁধ মেরামতের কাজ করা হবে।সাধারণ মানুষের অনেক অভিযোগ। তাদের কথায় প্রতিশ্রুতি মত দ্রুত কাজ হচ্ছে না। কিন্তু এই দাবি মানতে নারাজ ভেদিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অজিতকুমার মন্ডল। তার দাবি,জল নামলেই কিছু ভাঙা ঘরের বাসিন্দাদের  জন্য একটা ব্যবস্থা করা হবে।ত্রাণের অপ্রতুলতার দাবি উড়িয়ে দিয়ে তার পালটা বক্তব্য শুধু চিড়ে গুড় নয়। চাল , ডাল, মুড়ি থেকে পাউচ প্যাকেটের জল সবই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তার আরো দাবি বিদ্যুৎ না ফিরে এলে জেনারেটের চালাবার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আপাতত এই আশ্বাস কতটা কার্যকর হয় তাই দেখার। এমনিতেই নদীর পাড়ে যাদের বাস ভাবনা তাদের বারোমাসই। বাঁধ ভাঙলে দুর্ভোগের অন্ত থাকে না।জল যত নামবে নতুন নতুন সমস্যা সামনে আসবে। সমস্যা টিকে থাকার। তাগিদ ঘুরে দাঁড়াবার।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad