নিজস্ব প্রতিনিধি :- জল কমতেই দামোদর পাড়ের ভাঙন মারাত্মক আকার নিল পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের অমরপুরে।গত কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টিপাত ও তার সঙ্গে ডিভিসির ছাড়া জলে ফুলেফেঁপে উঠেছিল দামোদর। জামালপুর ব্লকের জ্যোৎশ্রীরাম অঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা জুড়ে তৈরি হয়েছিল বন্যা পরিস্থিতি।আর এখন দামোদরের নদে জল কমতেই পাড় জুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক ভাঙন। রোয়া ধান জমি ,সবজি চাষের জমি সবই দামোদরের গর্ভে চলে যেতে শুরু করায় মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে জ্যোৎশ্রীরাম অঞ্চলের অমরপুর এলাকার চাষিদের। এই পরিস্থিতিতে কি ভাবে চাষ জমি রক্ষা করবেন তা ভেবেই এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অমরপুরের চাষিরা।তারা চাইছেন নদী পাড়ের ভাঙন আটকাতে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিক প্রশাসন।
জামালপুর ব্লকের জ্যোৎশ্রীরাম অঞ্চলের বহু গ্রামই দামোদর লাগোয়া। এখানকার অমরপুর, শিয়ালী, কোড়া, মাঠ শিয়ালী প্রভৃতি গ্রামের সিংহভাগ বাসিন্দাই কৃষিজীবী। দামোদরের ধার বরাবর বিস্তির্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে তাঁদের অনেকেরই চাষজমি।এখন অমরপুর এলাকায় দামোদরের পাড় জুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক ভাঙন ।
এলাকার প্রবীন চাষি শেখ মোবারক বলেন,বিগত কয়েকদিন ধরে চলা ভারী বৃষ্টিপাত ও ডিভিসির জলাধার থেকে ছাড়া জলে দামোদর ফুলেফেঁপে উঠেছিল । এখন সেই জল কমতেই অমরপুরের প্রায় আড়াই কিলোমিটার এলাকায় দামোদরের পাড়জুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক ভাঙন। রোয়া ধান জমি,সবজি চাষের জমি সবই চলে যাচ্ছে দামোদরের গর্ভে।শেখ মোবারক আরও জানান,’ দামোদরের ধারে তাঁর ৩ একর ২৭ শতক চাষ জমি ছিল।দামোদরের পাড় ভাঙনে বিগত কয়েক বছরে তাঁর ১ একর জমি নদী গর্ভে চলে গিয়েছে।এখন ফের ভাঙন শুরু হয়েছে।এবার কতটা জমি দামোদরের গর্ভে তলিয়ে যাবে সেই দুশ্চিন্তায় তিনি এখন দিন কাটাচ্ছেন’।
এলাকার অপর চাষি সনাতন মাল,মৃত্যুন মাল প্রমুখরা বলেন, 'প্রতিবছর অমরপুর এলাকার চাষজমি দামোদরের গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। চাষিরা জমিহারা হচ্ছে । অথচ নদী পাড়ের ভাঙন আটকানোর জন্য কোন ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে না ।দামোদরে জল বাড়লে নেতা, মন্ত্রিরা এলাকায় এসে ছবি তুলে চলে যায় ।কাজের কাজ আর কিছুই হয়না ।অমরপুরের চাষিরা জমিহারা হয়েই চলেছে’ ।
আরো পড়ুন :-চাষিদের আনা অভিযোগ উড়িয়ে দিতে পারেন নি জ্যোৎশ্রীরাম অঞ্চল তৃণমূলের যুব সভাপতি রফিকুল ইসলাম । তিনি বলেন,’অমরপুর এলাকায় যে ভাবে দামোদরের পাড় ভেঙে চাষ জমি নদি গর্ভে তা সত্যি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে । বহু জমি নদি গর্ভে তলিয়ে গেছে। এলাকায় হাইস্কুল ,প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে। ভাঙন যে ভাবে বাড়ছে তা দেখে মনে হচ্ছে এইসব কিছুও দামোদরের গর্ভে চলে যাবে কি না ! রফিকুল বাবু জানান ,১০ বছর ধরে তাঁরা পুরশুড়া ও চাপাডাঙার সেচ দপ্তরের অফিসে ভাঙনের বিষয়ে লিখিত ভাবে জানিয়ে আসছেন । কিন্তু এখনও কোন সুরাহা হয় নি’। পূর্ব বর্ধমান জেলাপরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু জানিয়েছেন ,’নদী পাড়ের ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেছেন।'