আগেভাগেই প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়েছে।করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল হয়েছে গোটা দেশ। বিশেষজ্ঞদের ধারণা দেশে আসতে পারে তৃতীয় ঢেউ। করোনার তৃতীয় ঢেউ এলে শিশুরা বেশি সংখ্যায় আক্রান্ত হতে পারে বলে অনুমান করছেন চিকিৎসকরা। সেই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল করোনা আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। পরিকাঠামোর পাশাপাশি চিকিৎসকদের বিশেষ ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে পরিস্থিতি মোকাবিলায়।
চিকিৎসকরা জানান, শিশুদের টিকার ট্রায়াল সবে শুরু হয়েছে। ফলে তারা ভ্যাকসিনের বাইরে। এই অবস্থায় তৃতীয় ঢেউ এলে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশী হবে। সব দিক বিবেচনা করে, ইতিমধ্যেই হাসপাতালে ৪০ শয্যার শিশু কোভিড ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। প্রয়োজনে ওয়ার্ডে বেডের সংখ্যা আরও বাড়ানো হতে পারে জানানো হয়েছে হাসপাতালের তরফে। শুধুমাত্র কোভিডের চিকিৎসার জন্য শিশু ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীর ব্যবস্থাও করা হয়েছে। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য বেশি সংখ্যায় ভেন্টিলেটারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ভেন্টিলেটার অপারেট করার জন্য ৩ জুনিয়র চিকিৎসকের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোভিড আক্রান্ত শিশুদের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানতে প্রতি ঘন্টায় রিপোর্টিং ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিশুদের শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে যাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে অক্সিজেন সরবরাহ মেলে তারও ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।
বর্ধমান হাসপাতালের এই ব্যবস্থাপনায় খুশী জেলার বাসিন্দারা। পাশাপাশি শিশুদের এই কোভিড ওয়ার্ডে আরও বেডের সংখ্যা বাড়ানোর আবেদন জানান তারা। রায়নার বাসিন্দা সেখ ফিরোজ বলেন, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার প্রচুর খরচ।আমাদের মত গরীব মানুষজন উপকৃত হবে।তবে সিট বাড়ালে ভালো হয়।একই কথা বলেন বর্ধমান শহরের নীলপুরের বাসিন্দা মানস ভট্টাচার্য বলেন, কোভিডের চিকিৎসার নামে শহরের বেসরকারি নাসিংহোমগুলি মানুষকে বিপদে ফেলছে। বিশাল অংকের টাকা দিলে তবেই চিকিৎসা পরিষেবা মিলছে। তাই বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এই উদ্যোগে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।
শিশু বিভাগের প্রধান ও কোভিড সংক্রান্ত নোডাল অফিসার ডাঃ কৌস্তভ নায়েক বলেন,এখন শিশু ভর্তি হওয়া মাত্র কোভিড পরীক্ষা করানো হচ্ছে। এখন কোভিড আক্রান্ত ৫টি শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছে। এপর্যন্ত ৩৬টি শিশুকে কোভিড থেকে সুস্থ করে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।
ডাঃ নায়েক জানান, বর্ধমান হাসপাতালে বর্তমানে শিশু ওয়ার্ডে ১৪টি ভেন্টিলেটার রয়েছে। ৪০টি কোভিড বেড করা হয়েছে। ওয়ার্ড পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও হাই ফ্লো ন্যাসাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। এটি একটি নতুন ব্যবস্থা। যা সাধারণত আইসিইউয়ে থাকে। তীব্র শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যাযুক্ত রোগীদের এইচ এফ এন ও আইসিইউতে রাখা হয়। সেই ব্যবস্থাও শিশু ওয়ার্ডে করা হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রস্তুতির দিক থেকে বর্ধমান হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড তৈরি বলেই মানছেন কর্তারা।