নীলেশ দাস, আসানসোল:-দুপুরে চুরি করে রাতে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ। চোরের পুরো মেসেজ পড়ে হতবাক পুলিশ। গত শনিবার আসানসোলের হিরাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকেই কার্যত হতবাক পুলিশ কর্মীরা। অতীতে এমন ঘটনা কখনও ঘটেছে কি না। মনে করতে পারছেন কেউই।
এমনকি মেসেজের চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে কোনোভাবেই তার ফোন নম্বর ট্র্যাক করা যাবে না। আর চোরের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ। পশ্চিম বর্ধমানে প্রথম বলে মনে করা হচ্ছে । এই অভিযোগ পাওয়ার পর হিরাপুর থানার পুলিশের ঘুম ছুটেছে। বাজারে মোবাইল পরিষেবা আসার পর এই প্রথম ভার্চুয়াল ফোন থেকে এমন মেসেজে চোরেরা চুরি হুমকির অভিযোগ পাঠিয়ে আসানসোল পুলিশকে রীতিমতো দুশ্চিন্তায় ফেলেছে।
জানা গিয়েছে হিরাপুর থানার সূর্যনগর বাসস্ট্যান্ডের সামনে পরিবহন ব্যবসায়ী রাজেশ গুপ্তা, তার পরিবার নিয়ে থাকেন। তিনি জানান গত ২৪ শে জানুয়ারি ঘন্টা দুয়েকের জন্য পরিবারের লোকেরা এক আত্মীয়র বিয়ে বাড়িতে গিয়েছিলেন। দুপুর নাগাদ রাজেশ গুপ্তার বাবা প্রথম বাড়িতে আসেন এবং ফিরে দেখেন তিনটি ঘরের মধ্যে ঢোকার জন্য পিছনের দরজাটা ভাঙা। সেখান দিয়ে চোরেরা একটি ঘরে ঢুকে আলমারি থেকে আট হাজার টাকা নগদ এবং বেশ কয়েক লক্ষ টাকা মূল্যের গহনা নিয়ে পালিয়ে গেছে। পালানোর সময় চোরেদের হাত থেকে দু-একটা রুপোর গহনা সেখানে পড়ে যায় যা বাড়ির লোকেরা পরে উদ্ধার করে।
চুরির দিনই রাতে মেসেজ ভার্চুয়াল ফোন থেকে। হোয়াটসঅ্যাপে লিখে রাজেশ গুপ্তাকে পাঠানো হয়। তাতে লেখা হয় 'বেশ মজা পেলাম' কত টাকা গেল ইত্যাদি । আবার শুক্রবার রাত্রি ৭টা ৪ মিনিট থেকে ৭টা ৯ মিনিট পর্যন্ত বেশ কয়েকটি মেসেজ পাঠানো হয়। প্রথম মেসেজেই বলা হলো 'মজা আসলো চুরিটা করে।' সাতটা পাঁচে দ্বিতীয় মেসেজে বলা হলো 'ভালই মাল পেয়েছি। ছয় লাখ টাকার।' আরেকটি ম্যাসেজে লেখা 'তুই নম্বরটা ট্রাক করতে পারবি না।' তারপরের মেসেজ লেখা হল 'আমি তোর পুরো অটোবায়োগ্রাফি জানি।'
শনিবার লিখিতভাবে থানায় অভিযোগ পাওয়ার পর হিরাপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যান এবং তদন্ত শুরু করে। কেননা এটা শুধু বাড়ির মালিক নয় খোদ পুলিশ কেও চোর চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে এই ধরনের মেসেজের মধ্যে দিয়ে।