সোমনাথ মুখার্জি , পূর্ব বর্ধমান :- পূর্ব বর্ধমানের লোদনা গ্রাম পঞ্চায়েতের দুবরাজ হাট নামক একটি গ্রামে কয়েক দশক ধরে বাস করে আসছেন পাল পরিবার ।এ বাড়ির ঐতিহ্য সত্তর দশক ধরে একই ভাবে চলে আসছে । ঈশ্বর শরৎ চন্দ্র পাল এই ঐতিহ্য শুরু করেছিলেন পরে তাঁর পুত্র ঈশ্বর ভোলানাথ পাল এবং বর্তমানে ভোলানাথ পালের পুত্র উদয় চাঁদ পাল (চন্দন) তাদের বাপ ঠাকুরদার সব প্রথায় নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে আসছেন ।
পেশায় একজন ব্যবসায়ী চন্দনবাবু ।বর্তমানে মাইক্রো ফ্যামিলির যুগে এখনো একই সাথে পরিবারের লোকজন বাস করেন। পূর্ব বর্ধমানের দুবরাজ হাট গ্রামে হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই হয়ে একসাথে বাস করে আসছেন দীর্ঘদিন ।এই গ্রামে রয়েছে ষাট শতাংশ হিন্দু এবং চল্লিশ শতাংশের মতো মুসলিম পরিবার । পরিবারের সদস্য উদয়গিরি পাল জানান বিগত সত্তর দশকে তাঁর দাদু এই এলাকায় কী ভাবে হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতির সাথে বসবাস করা যায় সেটা দেখিয়ে দিয়ে গেছেন ।দাদু ঈশ্বর শরৎ চন্দ্র পাল এই গ্রাম তথা আশেপাশের গ্রামের মুসলিম ভাইদের নিয়ে হিন্দু মুসলিমের সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন ।বর্তমানে গ্রামবাসী ও পাল পরিবার সেই পথেই চলেছেন আজও ।
পাল পরিবার তাদের বাড়ির উৎসব অনুষ্ঠানে আজও কোনো না কোনো সামাজিক কাজ করে থাকেন । বিগত আট মাস আগে এই পাল পরিবারের এক মেয়ের বিয়েতে আমন্ত্রিত অতিথিদের সকলকেই গাছের চারা প্রদান করা হয়। পরিবারের তরফে জানানো হয় কবিড সিচুয়েশনে যেভাবে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়েছিল তাই এই চারা গাছ প্রদান ।কেননা গাছই পারে পরিবেশে অক্সিজেনের ভারসাম্য বজায় রাখতে।
এবার পাল পরিবারে ছিল উদয় চাঁদ পালের ছেলের বিয়ে ।ছেলের বিয়েতে আয়োজনের ছিল না কোনো রকম ঘাটতি ।এবং পুরনো প্রথামতো এবার ছেলের বিয়েতেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির রাখলেন উদয় বাবু ।চলছে রমজান মাস তাই তাঁর এলাকার মুসলিম ভাইদের নববধূর উপস্থিতিতে দিলেন ইফতার পার্টি । ফল পরিবারের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে শেখ শাহজাহান নামে এক মুসলিম ভাই জানান,তাদের গ্রামের পাল পরিবার বরাবর কোনোরকম জাতিভেদ করেন না তাঁদের পরিবারের কোনো উৎসবে ।তিনি জানান পাল পরিবারের উৎসবে হাজির হতে পেরে তাঁরাও ভীষণ খুশি ।