নীলেশ দাস, আসানসোল:- দীর্ঘ এক বছরেরও অধিক সময় ধরে করোনা মহামারী হাজার হাজার মানুষের যেমন প্রাণ কেড়ে নিয়েছে তেমনই বহু মানুষের রুটি রুজিও কেড়ে নিয়েছে। এই পরিস্তিতিতে প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও অসহায় হয়ে পড়েছেন বহু মানুষ । নেই খাবার,নেই অর্থ উপার্জনের উপায়,অজান্তেই মিলিয়ে যাচ্ছে প্রতিভা ও প্রতিভাধর মানুষগুলি ।বর্তমানে এমনি এক ঘটনার সাক্ষী আসানসোল শিল্পাঞ্চল ।
একসময় যার লেখা নাটক মঞ্চস্থ করে শুধু পশ্চিমবঙ্গই নয় ভারতবর্ষের বিভিন্ন মঞ্চ থেকে বহু পুরস্কার নিয়ে এসেছেন শিল্পাঞ্চলের নাট্য গোষ্ঠীগুলি, সেই লেখক সেই নাট্যকার এখন একাকিত্বের এক ভ্রাম্যমান (ভবঘুরে) জীবনযাপন করছেন । বন্ধ হয়ে রয়েছে তার স্ক্রিপ্ট লেখার কাজ । কিছু টা অভিমানে, কিছুটা অভাব অনটনে । নাম অরিন্দম সেনগুপ্ত, আসানসোল শহরে যিনি বাবাই নামে পরিচিত ৷
এই শহরেই রাস ডাঙার অঞ্চলের বাসিন্দা ছিলেন একসময়, ছোট থেকেই ভালো ক্রিকেটার ছিলেন ৷ পরে নাটক লেখা শুরু করেন । তার লেখা বেশকিছু নাটক মঞ্চস্থ হবার পর তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে শিল্পাঞ্চল জুড়ে । নাটক লেখার পাশাপাশি বৈদ্যুতিন মাধ্যমের চ্যানেলে নাচ,গানের রিয়ালিটি শো-এ নির্দেশনাও করেছেন ৷ যেটুকু উপার্জন করতেন তা থেকেই জীবনযাপন করতেন ।
প্রথম লকডাউনের পর থেকে বিনোদন ক্ষেত্র বন্ধ হয়ে যাওয়া রোজগারে টান পরে।ঘরভাড়া না দিতে পারায় কয়েক মাস রাস্তায় কাটাতে হয় তাকে।পরে তারই পরিচিত কয়েকজনের অনুরোধে আসানসোল জেলা হসপিটালে এর রুগীর পরিবারের রাত্রী যাপন করার জায়গায় আপাতত দিনযাপন করছেন তিনি।সেখানে তার চার বেলার খাবার জুটছে বটে,কিন্তু লেখার মতো পরিবেশ না থাকায় স্ক্রিপ্ট লেখা আপাতত বন্ধ,আগেও আর নাটক লিকবেন কিনা তা তিনি নিজেও জানেননা!
শিল্পাঞ্চলের নাট্য প্রেমী মানুষ,নাট্য কর্মীরা তার এই অবস্থার খবর পেয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন।তারা চান অরিন্দম আবার পুরোনো ছন্দে ফিরে আসুক,লিখুক আরো নাটক।নাট্য প্রেমীদের আশা করোনাকাল কেটে গেলে নাটক শুরু হবার আগে মঞ্চে সোনা যাবে যে নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে তার লেখক অরিন্দম সেনগুপ্ত।